বাসস দেশ-৫ : মুজিববর্ষে বাগেরহাটে ভুমিহীনরা পাচ্ছেন ৪১৫টি ঘর

123

বাসস দেশ-৫
ভুমিহীন-ঘর
মুজিববর্ষে বাগেরহাটে ভুমিহীনরা পাচ্ছেন ৪১৫টি ঘর
বাগেরহাট, ২১ জানুয়ারি, ২০২১ ( বাসস ) : মুজিব শতবর্ষে ‘বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে সমগ্র দেশ জুড়ে। বাগেরহাটে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীন ও ভুমিহীনদের জন্য ৪১৫টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায় গৃহ নির্মাণ কাজ এরই মধ্যে প্রায় শেষ হয়েছে। চলতি মাসের যে কোন দিন প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপি একযোগে উদ্বোধন করবেন এই ঘর। তার পরেই প্রতিটি ঘর উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে। এর মধ্যে বাগেরহাট জেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ৩১৫টি ঘর প্রস্তুত হয়েছে। আরও ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সেই ঘরে নতুন স্বপ্নে সারাজীবন কাটাবেন উপজেলার গৃহহীন ও ভূমিহীন ব্যক্তিরা। যারা আগে অন্যের জমিতে দিন অতিবাহিত করেছেন মুজিববর্ষে পুনর্বাসিত হচ্ছে সেই সকল উপকারভোগী। নতুন ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা গৃহহীন ও ভূমিহীনরা।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানাগেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সেমি পাঁকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ২ শতাংশ জমির উপর নির্মিত বাড়িটিতে থাকছে দুটি কক্ষ একটি রান্নার জায়গা ও একটি টয়লেট। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ৪৩৫ বর্গফুটের এই ঘরে রয়েছে দুটি বেড রুম, একটি বাথরুম, একটি রান্নাঘর, নামাজের জায়গা ও একটি বারান্দা। টিনসেডের এই ঘরে একটি পরিবার স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের আঠারোবাকী নদীর পাশে এক সারিতে নির্মান করা হয়েছে ৩৫ টি ঘর। লাল টিনসেডে অন্যরকম এক ধরনের সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য বসানো হয়েছে দুটি গভীর নলকুপ। বিদ্যুৎ সংযোগের কাজও চলমান রয়েছে। এছাড়া ভুমিহীন পরিবারের সন্তানদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে খেলার মাঠ। তারপাশেই থাকবে প্রশস্ত রাস্তা। নদীর পাশে লাগানো হবে গাছ, সবুজ বেষ্টনীতে বসবাস করবেন হতদরিদ্র এই জনগণ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় যাদের নামে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে তাদের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর হরা হবে।
উপকারভোগী বিধবা হালিমা বেগম বলেন, কোন জমি-জমা ছিল না। জমিজমা না থাকার কারণে স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই সস্তানসহ স্বামী পরিত্যক্তা মেয়েকে নিয়ে রাস্তার পাশে, বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে থাকতাম। আজ এ জায়গায়, কাল অন্য জায়গায় থাকতাম। বিভিন্ন সময় মেম্বর-চেয়ারম্যানদের কাছে থাকার জন্য একটু জায়গা চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এই ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি।
দিন মোহাম্মাদ বলেন, কোনদিন ভাবিনি পাকা ঘরে বসবাস করব। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে ঘর দিল এতে আমি খুব খুশি। দুই রুমের এই ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারব। বৃষ্টি আসলে এখন আর পলিথিন ঠিক করতে হবে না। না ঘুমিয়ে এক জায়গায় বসে থাকতে হবে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন শেখ বলেন, আমার এলাকায় যে আশ্রয়ন প্রকল্প হয়েছে তাতে আমরা খুব খুশি। বিনামূল্যে দুই শতক জমিসহ পাকাঘর পেয়ে এলাকার ভূমিহীনরাও খুব খুশি। এই ঘরে তারা খুব শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।
মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিকদার উজির আলী বলেন, আমাদের এলাকায় ভুমিহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মাফফারা তাসনীন বলেন, আমরা হতদরিদ্রদের জন্য প্রাপ্ত ঘরগুলোকে আমরা খুবই যতেœর সাথে তৈরি করেছি। এই ঘরগুলো মডেল ঘর হয়েছে। উপকারভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আমরা সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি। যারা আসল ভূমিহীন তারাই এই সুবিধার আওতায় এসেছেন।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৯ উপজেলায় ৪১৫ টি গৃহহীন-ভূমিহীনকে রঙিন টিনের ছাউনি, সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩১৫টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১১৫০/কেজিএ