চট্টগ্রামে করোনাক্রান্তের সংখ্যা আরো কমছে

234

চট্টগ্রাম, ২১ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ টানা আট দিন একশ’র নিচে রয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি সংক্রমণের হারও কম। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময়ে কারো মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৬৭ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৯ জন ও ছয় উপজেলার ৮ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৩৯৯ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৫ হাজার ২৪৮ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ১৫১ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজান ও ফটিকছড়িতে ২ জন করে এবং হাটহাজারী, সীতাকু-, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৭ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৬ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫৩ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৩০৬ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৯৬ জন এবং বাসা থেকে ২৬ হাজার ২১০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ৩১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩৯৮ জন।
গতকাল ছিল একশ’র নিচে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের টানা অষ্টম দিন এবং এ মাসের দ্বিতীয় সর্বনি¤œ সংক্রমণ হার। এ আট দিনের হিসোবে দেখা যায়, গতকাল ছাড়াও এ মাসে আরো একদিন ৬৭ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। সংক্রমণ হার ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর চেয়ে কম এবং করোনাকালে চট্টগ্রামে সর্বনি¤œ সংক্রমণ হারের রেকর্ড হয় ১৩ জানুয়ারি। এদিন এক হাজার ৭৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণের হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। দু’দিনই করোনায় কেউ মারা যাননি। এছাড়া, ১৯ জানুয়ারি মৃত্যু শূন্য দিনে ৬৯ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ১৮ জানুয়ারি নতুন বাহক শনাক্ত হয় ৯৮ জন। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। করোনায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। ১৭ জানুয়ারি ৮৮ জন করোনায় আক্রান্ত পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ সময়ে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ১৬ জানুয়ারি ৬৫ জন নতুন বাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। করোনায় কেউ মারা যাননি। ১৫ জানুয়ারি ৮৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মেলে। হার ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এদিন কারো মৃত্যু হয়নি। ১৪ জানুয়ারি নতুন ৯১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। সংক্রমণের হার ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে একজন মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টার ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৮০৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৩১১টি নমুনার ১৬টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৮৩ জনের নমুনায় ১৯ জন ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৯টি নমুনার ৩টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪৭টির মধ্যে ৬টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৫টি নমুনার ১টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ১১০ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় একটি ছাড়া অবশিষ্ট সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়, বিআইটিআইডি’তে ০ দশমিক ৯৯ শতাংশ, চমেকে ৫ দশমিক ১৪, চবি’তে ২২ দশমিক ৮৯, আরটিআরএলে ৩৩ দশমিক ৩৩, শেভরনে ১১ দশমিক ০৩, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১২ দশমিক ৭৬, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ০ দশমিক ৯১ শতাংশ।