মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় কৃষিখাত প্রকল্পে ইচ্ছুক বাংলাদেশ : মোমেন

490

ঢাকা, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চ্যানেল বিশেষত ওআইসি প্লাটফরমের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতে বিভিন্ন চাষাবাদের সুযোগ সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামিক অর্গানাইজেশন ফর ফুড সিকিউরিটি (আইওএফএস) প্লাটফরমের মাধ্যমে আফ্রিকান অঞ্চলে শস্য চাষাবাদের কিছু প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু রিসার্চ সেন্টার ফর ফরেন পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের জন্য বিদেশে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ ও চাকরির সুযোগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফুড প্রোসেসিং অ্যাসোসিয়েশন (আইএফপিএ) ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যাগ্রো-ফুড প্রক্রিয়াজাত খাতে বিনিয়োগের পাশাপাশি অ্যাগ্রো-ইন্ডাস্ট্রিয়াল উন্নয়নের জন্য তহবিল সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তঃ-ওআইসি বিনিয়োগের জন্য চ্যানেল হতে পারে।
ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) আফ্রিকায় বাংলাদেশের প্রবেশের একটি চমৎকার প্লাটফরম উল্লেখ করে মোমেন বলেন, প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশ সরকার আফ্রিকার কৃষি ভূমি লিজ নেয়ার চেষ্টা করছে। ২০১৬ সালে আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়ায় প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ১১ বাংলাদেশী কৃষকের নিয়োগ দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি টেকসই কৃষি শুধু আমাদের টিকে থাকাই নিশ্চিত করবে না, উপরন্তু এটা বিশ্বব্যাপী আমাদের জাতীয় সমৃদ্ধি, বিনিময়ের দুয়ার খোলার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী আমাদের পরিচিত বিস্তারেও অবদান রাখবে।’
মন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের একটি অনুসন্ধানী মিশন আফ্রিকান দেশগুলোতে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের সম্ভাবনা যাচাই করতে আইভরি কোস্ট, লাটভিয়া, সেনেগাল ও ঘানা সফর করে।
তিনি আরো বলেন, সে সময় অনুসন্ধানী দলটি দেখতে পায় যে, ওই দেশগুলোতে ধান, গম, তুলা কফি ইত্যাদির উৎপাদন- ওই দেশগুলো ও বিনিয়োগকারী উভয়পক্ষের জন্যই লাভজনক হবে।
তিনি আরো বলেন, কেনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন যে- দেশটি কর্তৃপক্ষ তুলা আবাদের জন্য বাংলাদেশী কোম্পানীকে প্রায় ১ হাজার একর জমি লিজ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সুদানের ব্যাপারে মোমেন বলেন, দেশটিতে ২০ মিলিয়ন হেক্টর এলাকা রয়েছে। এর ৪০ শতাংশ ভূমি কৃষি জমি। বাংলাদেশী কৃষি বিজ্ঞানীরা সুদানে চাষাবাদের উপযুক্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেন। সুদান কর্তৃপক্ষ লোহিত সাগরে মাছ ধরার জেলে নৌযানগুলোর মেরামত ও তৈরির জন্য বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানি যে জাম্বিয়া, সিয়েরা লিওনের মতো দেশগুলো এবং মাগরেব ও সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে উর্বর জমির সম্ভাবনা রয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ইশতিহারে কৃষি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা লক্ষ্য ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের কৃষক সম্প্রদায়য়ের জন্য বাজার ও ন্যায্য মূল্য উভয়ই নিশ্চিত করা। আর এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতিহারের অন্যতম প্রাধান্যপ্রাপ্ত বিষয়।’
মোমেন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষি খাত উদ্ভাবন, কারিগরি, বর্ধন ও বাজারজাতকরণ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন