মুজিব বর্ষে প্রথম দফায় ৬৬,১৮৯ গৃহহীন পরিবার ঘর পাচ্ছে

425

|| সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ||
ঢাকা, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস)- মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে আগামী ২৩শে জানুয়ারি সারা দেশের ৬৬,১৮৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর দেয়া হবে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক মোঃ মাহবুব হোসেন বাসস’কে বলেন, “মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীণ মানুষকে আবাসন সুবিধার আওতায় আনতে সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসাবে আশ্রয়ণ প্রকল্প গৃহহীন মানুষের জন্যে ৬৬,১৮৯ টি ঘর তৈরি করেছে।” তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য জমি ও বাড়ি বিতরণের এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ‘কেউ গৃহহীন থাকবে না’ স্লোগানের সাথে বিশেষ এ উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প ২০২০ সালে ৮,৮৫,৬২২ পরিবারের তালিকা তৈরি করেছে। এর মধ্যে ২,৯৩,৩৬১ পরিবার ভূমিহীন ও গৃহহীন এবং ৫,৯২,২৬১ পরিবার রয়েছে যাদের ১-১০ শতাংশ জমি রয়েছে কিন্তু কোন আবাসন সুবিধা নেই।
প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, মুজিব বর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলার ৪৪টি প্রকল্প গ্রামের আওতায় ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেখানে মোট ৩,৭১৫টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।
প্রকল্প অফিস সুত্র জানায়, বিশে^ প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার একসাথে ৬৯,৯০৪ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আবাসন সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসিত করতে যাচ্ছে। আশ্রয়ণ-২(জুলাই ২০১০-জুন ২০২২) প্রকল্পের আওতায় ৪,৮৪০.২৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ২,৫০,০০০ ভূমিহীন, গৃহহীন ও বাস্তুচ্যুত পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১০ সালে ২৫০,০০০ গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর আওতায় ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৯ সালের জুন মাসের মধ্যে সারাদেশে ১,৯২,২৭৭ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ৪৮,৫০০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এছাড়াও ১,৪৩,৭৭৭ পরিবার যাদের নিজস্ব (১-১০ শতাংশ) জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই তাদের সে জমিতে সেমি ব্যারাক, টিনের ব্যারাক বা বিশেষ নকশার ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকার কক্সবাজারের খুরুশকুলে জলবায়ু উদ্বাস্তু ৪,৪০৯ পরিবারের জন্যে ১৩৯টি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, জমি ও আবাসন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্য্র দূরীকরণ, প্রশিক্ষণ, ঋণ সুবিধা দেওয়া, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, বিভিন্ন আয়বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা, পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করা, বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা এবং ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙ্গন ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসিত পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ-মহিলা সদস্যদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে এর মাধ্যমে তারাআয়বৃদ্ধি মূলক কাজে নিয়োজিত হতে পারবেন।
প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, আশ্রয় ও সহায়তার মাধ্যমে গৃহহীন মানুষদের স্বাবলম্বী করে তাদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে সরকার প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ‘ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য ভবিষ্যতে প্রকল্পটির কার্যক্রম আরও গতিশীল করা হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।