বাসস দেশ-৯ : পিরোজপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান

110

বাসস দেশ-৯
কউিনিটি ক্লিনিক
পিরোজপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান
পিরোজপুর, ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস): শেখ হাসিনার অবদান- কমিউনিটি ক্লিনিক বাঁচায় প্রাণ স্লোগান নিয়ে পিরোজপুরের পল্লী অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে পল্লী এলাকার মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক রোগ চিকিৎসা সেবা প্রদানের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব ক্লিনিকের দু’একটিতে এখন গর্ভবতী মা-দের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবও করানো হচ্ছে সযতেœ। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার ৭ উপজেলার ৫২ টি ইউনিয়নের ১শত ৬৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ১০ লাখ ০৮ হাজার ১৫৮ জন রোগী চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা হচ্ছে ৬ লাখ ২৬ হাজার ০৩ জন। একই সময় ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫১৭ জন পুরুষ এবং ৩৬ হাজার ৬ শত ৩৮ জন শিশুকে চিকিৎসা এবং ওষুধ দেয়া হয়েছে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে উল্লেখিত সময় ১৯ হাজার ৭২২ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য পিরোজপুর, বরিশাল, খুলনা এবং ঢাকার সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলার ১ শত ৭২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বর্তমান সরকার ইতিমধ্যেই ১ শত ৬৬ টি ক্লিনিক চালু করেছে এবং ৪ টির নির্মাণ কাজ অতি সম্প্রতি শেষ হয়েছে এবং অচিরেই এ চারটি চালুর প্রস্তুতি চলছে। চালু কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সদরে ১৭টি, নাজিরপুরে ২৮টি, নেছারাবাদে ৩১টি, কাউখালীতে ১৬টি, ভান্ডারিয়া ২৬টি, মঠবাড়িয়ায় ৪২টি এবং ইন্দুরকানীতে ১২টি রয়েছে।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ হাসনাত ইউসুফ জাকি বাসসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে পল্লী এলাকার নারী-পুরুষ-শিশুর স্বাস্থ্য সেবা দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর এক যুগান্তকারী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করেন। ২০০১ পরবর্তী সরকার এর নির্দেশে পিরোজপুরসহ সারাদেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া ক্লিনিক চালুর পাশাপাশি নতুন ক্লিনিক ভবণ নির্মান করছে। জ্বর, আমাশয়, গ্যাষ্ট্রিক, কাশি, ডায়রিয়া, জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ, বদ হজমসহ ৩৩ ধরনের রোগের ওষুধ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া পিরোজপুরের কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে নিরাপদে সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক জন নারী-পুরুষ এ প্রতিবেদককে জানান বাড়ি থেকে অনতি দূরে এসব ক্লিনিক চালু হওয়ায় তাদের অর্থ ও কষ্ট দুটোই লাঘব হচ্ছে এবং তারা চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে যথেষ্ট উপকৃত হচ্ছে। পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো. চান মিয়া মাঝি জানান, তার ইউনিয়নের ক্লিনিকে নিয়মিত যতœসহকারে আগত রোগীদের চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হয়। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ দারুনভাবে উপকৃত হচ্ছে। উমেদপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধু শাহিনুর বেগম (৩২) জানান, তিনি নিজে তার স্বামী এবং ৩টি সন্তান এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগের সুচিকিৎসা ও ওষুধ পাচ্ছেন । এখানে এ ক্লিনিক না হলে আমাদের মত অস্বচ্ছল মানুষদের অনেক অর্থ ব্যয় ও কষ্ট করে শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হত, যা আমাদের পক্ষে সম্ভব হত না। পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল হাকিম হাওলাদার জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য। পিরোজপুর জেলার সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল জনগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই এ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মূল্য উদ্দেশ্যে। এর আওতায় সন্তানসম্ভবা মায়েদের মাতৃত্বকালীন যাবতীয় সেবা নিশ্চিতকরা, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার সকল ধরনের সেবা প্রদান করা, জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন এবং নতুন বিবাহিত দম্পতি ও সন্তান সম্ভবা মায়েদের নিবন্ধিত করা এবং মা ও শিশুর খাদ্য ও পুষ্টির বিষয়ে সহায়তা প্রদান, বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান এবং জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে এসব কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১২৫৬/নূসী