বাসস ক্রীড়া-৩ : তিন জন যাত্রীর জন্য ৪৭ খেলোয়াড় কঠোর কোয়েরেন্টাইনে

120

বাসস ক্রীড়া-৩
টেনিস-অস্ট্রেলিয়ান ওপেন
তিন জন যাত্রীর জন্য ৪৭ খেলোয়াড় কঠোর কোয়েরেন্টাইনে
মেলবোর্ন, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চার্টার্ড বিমানে আসা তিন জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় ঐ বিমানে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ৪৭ জন খেলোয়াড়কেই কঠোর কোয়ারেন্টাইন নীতি মানতে হবে। কিন্তু সেজন্য আগামী মাসে নির্ধারিত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তারিখ কোনভাবেই আর পেছাবে না বলে নিশ্চিত করেছেন টুর্নামেন্ট প্রধান ক্রেইগ টিলে।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের বিশেষ বিমানে করে মেলবোর্নে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছির আয়োজক কর্তৃপক্ষ। করোনা সতর্কতা নিশ্চিতের সর্বোচ্চ মান হিসেবে এটিও একটি পন্থা ছিল। কিন্তু শনিবার বিমানে থাকা একজন কেবিন ক্রুসহ আরো দুই যাত্রী করোনা পজিটিভ হওয়ায় ঐ বিমানের সকল খেলোয়াড়ই এখন হুমকিতে পড়েছেন। পজিটিভ হওয়া তিন জনের অবশ্য কেউই খেলোয়াড় নন। এদের মধ্যে একজন হলেন ২০১৯ ইউএস ওপেন বিজয়ী কানাডিয়ান বিয়ানকা আন্দ্রেস্কুর কোচ সিলভেইন ব্রুনেউ। বিমানে থাকা সকলকেই এখন এডিলেডে নিজ নিজ হোটেল কক্ষে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে খেলোয়াড়দের যে পাঁচ ঘন্টার অনুশীলনের অনুমতি দেয়া হয়েছিল সেই সুযোগ আর ঐ ৪৭ খেলোয়াড় ভোগ করতে পারছেন না। এদের মধ্যে থাকা শীর্ষ খেলোয়াড়রা হলেন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, স্লোয়ানে স্টিফেন্স, কেই নিশিকোরি ও এ্যাঞ্জেলিক কারবার। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের প্রস্তুতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল নাইনে টিলে বলেছেন, ‘আমরা সব সময়ই জানি এই মহামারীতে কেউই নিরাপদ নয়, সুক্ষ কারনেও যে কেউই আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান ওপেন নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকলকেই সকল স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই পালন করতে হবে।’
ইতোমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় এসে পৌঁছেছেন টুর্নামেন্টের শীর্ষ খেলোয়াড়রা। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন নোভাক জকোভিচ, রাফায়েল নাদাল, সেরেনা উইলিয়ামস ও নাওমি ওসাকা।
সোরানা ক্রিস্টি ও বেলিন্ডা বেনচিচের মত কয়েকজন খেলোয়াড় ইতোমধ্যেই অনুশীলন করতে না পারায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ তুলেছেন। একইসাথে আরো অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ পজিটিভ হবার পর এত কঠোর নিয়মনীতির ব্যপারে তাদেরকে আগে অবগত করা হয়নি।
টিলে স্বীকার করেছেন পুরো বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই মেনে নেয়া বেশ কঠিন। কিন্তু ঝুঁকি এড়াতে এর থেকে ভাল কোন উপায় তাদের হাতে নেই।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলস থেকে আসা বিশেষ বিমানে ২ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ঐ বিমানে ১২ জন ক্রু-মেম্বার ও ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ২৪ জন খেলোয়াড় ছিলেন। তাদের প্রত্যেককে বর্তমানে হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আপাতত পরবর্তী মেডিক্যাল রিপোর্ট আসা পর্যন্ত কেউই হোটেল কক্ষ থেকে বেরোতে পারবেন না।
এরপর আবুধাবি থেকে মেলবোর্নে আসা আরেকটি বিমানেও একজন যাত্রীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই বিমানে মোট ৬৪ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩ জন খেলোয়াড়। এই খেলোয়াডদেরও ওই একই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
করোনার কারনে গত ১০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মত পিছিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে না ওঠায় ক্যারিয়ারে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে নাম প্রত্যহার করেছেন রজার ফেদেরার। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় অনিশ্চিত এন্ডি মারেও। এই পরিস্থিতিতে শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেই টুর্নামেন্ট আয়োজন নিয়ে আরও বিপাকে পড়লেন আয়োজকরা।
এই ৪৭ খেলোয়াড় টুর্নামেন্ট মিস করবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে টিলে জানিয়েছেন তাদেরকে বাদ দেয়া হবে না। অবশ্যই এই পরিস্থিতিতে তারা অনুশীলনের কোন সুযোগ পাচ্ছেন না। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত তারা কোন অবস্থায় থাকেন।
বাসস/নীহা/১৪৫০/স্বব