দক্ষ জনশক্তি তৈরির ওপর জোর দিয়েছে সরকার : পলক

500

ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির ওপর জোর দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বিগত বারো বছরে দেশে একটি শক্তিশালী তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এর সুফল পাচ্ছে জনসাধারণ।
আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে ডিজিটাল বাংলাদেশের একযুগ (বারো বছর) পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্লকচেইন, রোবোটিকসসহ থ্রিডি প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি গড়ে তোলা হ”েছ।
তিনি বলেন আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারিকালে অনলাইন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন এমনকি কোর্টের কার্যক্রমও চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনা পোর্টাল, কোভিড ট্রেসার, কোভিড ১৯ ট্রাকার, ফুড ফর ন্যাশন, হেলথ ফর ন্যাশনসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে করোনা মোকাবেলা করছে।
পলক বলেন, বিগত বারো বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি ব্যাকবোন তৈরি হয়েছে,যা প্রায় গ্রাম এলাকা পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের প্রায় ৩ হাজার ৮’শ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় এসেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন,ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা ও বাস্তবায়নের এক যুগ পূর্তি হচ্ছে চলতি বছরে। জাতীয় উন্নয়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ মডেল সারা বিশ্বে সমাদৃত ও প্রশংসিত।
ডিজিটাল প্লাটফর্মের আওতায় সরকার অফিসের কার্যক্রমে কাগজ ও কলমের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ই-অফিস কার্যক্রম চালু করেছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এর অংশ হিসেবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সরকারি অফিসে কাজের গতিশীলতা ,স্ব”ছতা এবং জবাবদিহিতা আনতে ই-নথি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৮ হাজারেরও বেশি অফিসের প্রায় ৯০ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা ই-নথি ব্যবহার করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফ্রিল্যান্সাররা গ্রামেগঞ্জে থেকেও বিদেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন শহর এবং গ্রামের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ছয় হাজার ৭’শ ৮০ টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ মানুষকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। দেশে ৩৯ টি হাইটেক পার্ক/আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এরমধ্যে ৫ টির নির্মাণ শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বিশ্বের ৭ ম Tier-IV ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
ষ্টার্টআপ ও উদ্বোধনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য ৪৪ টি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের ১১৮ জন স্টার্টআপ প্রতিনিধিকে কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ এবং ১৩৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব গড়ে তোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. বি. এম. আরশাদ হোসেনসহ বিভাগ ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সঞ্চালনা করেন এলআইসিটি প্রকল্পের পলিসি এডভাইজার সামি আহমেদ।
বক্তারা বলেন,পাবলিক- প্রাইভেট ও পার্টনারশিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য এবং অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত করতে তা উউনিয়ন পর্যন্ত মানুষের দোর গোঁড়ায় পৌছে দিতে কাজ করছে সরকার। ফলে দেশের ৬৪ জেলায় এর সুফল পেতে কাজ হচ্ছে।