বাসস দেশ-৬ : মাগুরায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত ১১৫টি ঘর

156

বাসস দেশ-৬
ভূমিহীন-ঘর
মাগুরায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত ১১৫টি ঘর
মাগুরা, ১৫ জানুয়ারি. ২০২১ (বাসস) : মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাগুরায় প্রথম পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১১৫টি ঘর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ার ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মোট ১১৫ টি ঘরের মধ্যে সদর উপজেলার হাজরাপুর, আমুড়িয়া, জাগলা, লক্ষীপুর গ্রামে ১৫টি, শালিখা উপজেলার উজগ্রামে ৫০টি, শ্রীপুর উপজেলার চাকদাহ, রামচন্দ্রপুর, তখলপুর, মুজদিয়া, মদনপুর, নহাটা, কাদিরপাড়া, পুকুরিয়া, বড়ালিদাহ গ্রামে ২০টি, মহম্মদপুর উপজেলার দিঘা, বামনপাড়া, চরছাতিয়ানী গ্রামে একইভাবে ৩০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বধানে উপজেলা প্রশাসন এ ঘর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ‘গৃহ প্রদান নীতিমালা’ ২০২০ অনুযায়ী’ দুই শতাংশ সরকারি খাস জমি বন্দবস্ত প্রদান পুর্বক জেলার চার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব ঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে জমির রেজিট্রেশন,নামজারি,দলিল প্রস্তুতসহ সকল প্রন্তুতি সম্পন্ন করে নির্মিত এসব ঘর উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর উপকারভোগীদের কাছে এসব ঘর হস্তান্তর করা হবে।
সরেজমিন জেলার শালিখা উপজেলার উজগ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, দুই শতক সরকারি খাস জমির উপর দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ঘরের সাথেই রয়েছে একটি টয়লেট ও একটি রান্নাঘর। ঘরের চালে ব্যবহার করা হয়েছে রঙ্গিন টিন। এছাড়া ঘরের সামনে বসবাসকারিদের ব্যবহার উপযোগি জায়গাও রাখা হয়েছে।
উজগ্রামে ঘর বরাদ্দ পাওয়া ভূমিহীন শারীরিক প্রতিবন্ধী বাপ্পি সরদার জানান, দুই বছর আগে মাগুরা সদর উপজেলার রামনগর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি তার বাম পা হারান। এ অবস্থায়ও ঘরে বসে না থেকে ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বাবা জব্বার সরদার ও মা লাকি খাতুনের সাথে উজগ্রামের মতিয়ার মোল্যা নামে একজনের যায়গায় ছাপড়া ঘরে থাকতেন। তার বাবা একজন দিন মজুর। ঘর করার সামর্থ ছিল না তার। সরকার ঘর করে দেয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের একটি যায়গা পেয়ে খুবই ভালো লাগছে তার। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করার পাশাপাশি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেন।
একই গ্রামের ঘর বরাদ্দ পাওয়া ভ্যান চালক সাইফুল ইসলাম জানান, আমার নিজের কোন জায়গা জমি ছিল না। স্ত্রী তামান্না খাতুন ও ৪ বছরের কন্যা সন্তান মরিয়মকে নিয়ে মামা গফ্ফারের বাড়িতে একটি ভাঙ্গা টিনের ঘরে দিন কাটছিল আমাদের। সরকারি ঘর বরাদ্দ পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছি। পাকা বাড়িতে স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে এখন নিজের মত করে শান্তিতে বসবাস করতে পারবো। ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সাইফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বিশেষ উদ্যোগ। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাগুরা জেলার চার উলেজেলায় প্রথম পর্যায়ে ১১৫ টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এসব ঘর উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আগামী ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে মাগুরার ১১৫টি ঘরসহ দেশব্যাপি ৬০ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের উদ্বোধন করবেন ।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১৩০০/কেজিএ