বাজিস-৩ : ভোলায় কোরবানিতে চাহিদার চেয়ে বেশি পশু রয়েছে

173

বাজিস-৩
ভোলা-কোরবানি-পশু
ভোলায় কোরবানিতে চাহিদার চেয়ে বেশি পশু রয়েছে
ভোলা, ১৪ আগস্ট, ২০১৮ (বাসস) : আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি পশুর মজুদ রয়েছে। এবছর কোরবানির জন্য সম্ভাব্য চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ পশু। আর মজুদ রয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষ। যা গত বছরের তুলনায় ১০ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার মোট প্রায় ১৫’শ খামারে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে পশু মোটা-তাজা করা হচ্ছে। এর বাইরেও পারিবারিকভাবে জেলায় প্রচুর পরিমাণ গরু-ছাগল ইত্যাদি প্রতিপালন করা হয়।
জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহম্মদ আলমগীর বাসস’কে বলেন, গত কোরবানিতে জেলায় ৯৪ হাজার পশু জবেহ করা হয়েছে। এবছর গরু-ছাগলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে সম্ভাব্য প্রায় এক লাখ ধরা হয়েছে। কোন ধরনের ক্ষতিকর উপাদান ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে খামারগুলোতে পশু হৃষ্ট-পুষ্ট করা হচ্ছে। সবুজ ঘাস, দানাদার খাদ্য, ভাত, খরের সাথে ইউরিয়াসহ সুষম খাবার খাওয়ানো হচ্ছে এসব খামারে।
সদর উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: দীনেশ চন্দ্র মজুমদার বাসস’কে জানান, সাধারণত ৫টির বেশি গরু রয়েছে এমন খামারকেই প্রানি সম্পদ খামার হিসাবে গন্য করে। গরু হৃষ্ট-পুষ্ট করা হয় ২ ধরনের পদ্ধতিতে। একটি হলো ২-৩টি গরু পালন, অন্যটি খামার পদ্ধতি। প্রথম পদ্ধতিতে গরুর আকর্ষণীয় রং, শিং, চুট, খাবারের অভাবে দূর্বল কিন্তু রোগে আক্রান্ত নয় এসব গরু কিনতে বলা হচ্ছে পালনকারীকে। কারণ এসব গরু একটু যতœ ও উন্নত খাবার পেলে মোটা-তাজা হয়ে উঠে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় পন্থায় মূলত খামারে গরু পালনকে বুঝায়। এসব গরুকে সবুজ ঘাস, খৈল ভুষির পাশাপাশি ইউরিয়া সার-চিটাগুর-খর মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। খামারি গরুর বাইরেও প্রচুর পরিমাণ গরু-ছাগল রয়েছে জেলায়। অনেকেই কোরবানি উপলক্ষে সেসব পশু বিক্রি করবেন হাটে। জেলায় এই খাতে প্রায় ২৫ ভাগ মানুষ জড়িত রয়েছেন বলে জানান এই প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা।
জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোহম্মদ আলমগীর আরো বলেন, জেলায় পর্যাপ্ত গরুর মজুদ থাকায় ইন্ডিয়া থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন হয় না। তবে কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা কিছু বড় গরু ভোলায় আনেন বিক্রির জন্য। এছাড়া এখান থেকে লক্ষীপুর, নোয়াখালী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরু বিক্রি করা হয়।
প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে যাতে অসুস্থ বা রুগ্ন গরু না তোলা হয় সে জন্য জেলার ৭ উপজেলায় ৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এসব মেডিকেল টিমের সদরে ৩টি উপ-কমিটিসহ অন্যান্য উপজেলায় ২টি করে উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল থেকেই এসব টিম পশুর হাটগুলোতে কাজ করা শুরু করেছে। এসব টিমকে মনিটরিং করার জন্য উপজেলা পর্যায়ে একটি করে বিশেষ টিম প্রস্তুত করা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পশু জবেহ’র জন্য জেলায় ১৩৫ জন কষাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ১৮ বছরের নিচে যাতে কেউ পশু জবেহ না করে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ সুরক্ষা ও পশুর চামরা যাতে নষ্ট না হয় ইত্যাদি বিষয়ে কষাইদের দক্ষ করে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলায় মোট ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২০টি গরু, ১ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০টি ছাগল, মহিষ ৮৪ হাজার ৮৩৫টি ও ১৯ হাজার ৭৭২টি ভেড়াসহ মোট ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৭টি পশু পালন করা হচ্ছে। জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৬৭টি চর রয়েছে। এসব চরে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর সবুজ ঘাস হয়। তাই চরে যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার গরু-ছাগল, মহিষ পালন করা হচ্ছে।
বাসস/এইচএএম/১৬১০/মরপা