প্রিমিয়ার লিগ: ফোডেনের একমাত্র গোলে সিটির জয়

591

লন্ডন, ১৪ জানুয়ারি ২০২১ (বাসস) : ব্রাইটনকে ১-০ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ৪৪ মিনিটে দলের একমাত্র ও জয়সূচক গোলটি করেছেন ফিল ফোডেন।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে শিরোপা লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে কিছুটা হলেও পিছনে রেখেছেন সমালোচকরা। কিন্তু সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা সাত ম্যাচে জয়ী হয়ে পেপ গার্দিওলার দল আবারো স্বরুপে ফিরেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ লিগ চ্যাম্পিয়নরা এবারের মৌসুমের শুরুটা মোটেই ভালভাবে করতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি আবারো ফর্মে ফিরে দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিভারপুলের তুলনায় মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চার পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে রয়েছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। যদিও ইউনাইটেড ও লিভারপুলের তুলনায় এক ম্যাচ কম খেলেছে সিটিজেনরা। গ্র্যাহাম পটার্সের ব্রাইটানের বিপক্ষে সিটি কোন পরীক্ষীত স্ট্রাইকারকে মাঠে নামাননি কোচ। কিন্তু তা সত্বেও ফোডেনর প্রথমার্ধের গোলটিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়।
ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বিবিসি’কে বলেছেন, ‘আমরা জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে। মানসিক ভাবে ব্রাইটন বেশ শক্তিশালী একটি দল। প্রথমার্ধটা দারুন কেটেছে এবং আমরা সুযোগও তৈরী করতে পেরেছি। দ্বিতীয়ার্ধে একটি ভাল সুযোগ নষ্ট করার পর থেকে আমরা ভাল খেলা শুরু করি। এই ধরনের ম্যাচে আমাদের জয় পাওয়াটা জরুরী। এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। প্রতিটি ম্যাচই এমনই হবে।’
ইকে গুনডোগানের সহযোগিতায় ফর্মে থাকা কেভিন ডি ব্রুইনা স্বাগতিকদের হয়ে গোলের দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ব্রাইটন গোলরক্ষক রবার্ট সানচেজ বেলজিয়ান তারকার ডান পায়ের জোড়ালো শটটি দারুন দক্ষতায় রুখে দেন। বিপরীতে ব্রাইটনের লিনড্রো ট্রোসাডের শট সিটি গোলরক্ষক এডারসন আটকে দেন। এরপরপরই সিটি ছন্দ ফিরে পায়। তারই ধারাবাহিকতায় বিরতির পাঁচ মিনিট আগে ডি ব্রুইনাকে আবারো হতাশ করেন ডিফেন্ডার জোয়েল ভাল্টম্যান। অবশেষে ৪৪ মিনিটে আর কোন ভুল করেননি ফোডেন। ডি ব্রুইনার আক্রমন থেকে বল পেয়ে ২০ বছর বয়সী ফোডেন দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে পোস্টের খুব কাছে থেকে বল জালে জড়ান। মৌসুমে এটি ইংলিশ এই তরুণ স্ট্রাইকারের অষ্টম গোল। একইসাথে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় চলতি মৌসুমে তিনিই এখন সিটির সর্বোচ্চ গোলদাতা।
বিরতির ঠিক পরপরই রিয়াদ মাহারেজ ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারতেন। কিন্তু তার বাম পায়ের দূর্বল শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। গুনডোগানের একটি ভাল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন সানচেজ। ফিরতি বলে বার্নান্ডো সিলভার শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ম্যাচের শেষের দিকে হুয়াও ক্যান্সেলো ও ডি ব্রুইনাও সিটিকে বড় জয় উপহার দিতে পারেননি। এক গোলে এগিয়ে থেকেও সিটি তা সহজে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল। ব্রাইটন বেশ কয়েকবার সিটির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তবে এডারসনের কৃতিত্বে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছে সিটি। ইনজুরি টাইমে ডি ব্রুইনা পেনাল্টি আদায় করে নিলেও বদলী খেলোয়াড় রাহিম স্টার্লিং বারের উপর দিয়ে বল বাইরে পাঠালে ব্যবধান দ্বিগুন হয়নি।
সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এনিয়ে টানা ১৪ ম্যাচে অপরাজিত আছে সিটি, এর মধ্যে টানা সাত ম্যাচে জয়ী হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারনে বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড়কে দলে পাননি গার্দিওলা। সেল্ফ আইসোলেশনে থাকায় সার্জিও এগুয়েরো কাল অনুপস্থিত ছিলেন। কোভিড-১৯ পজিটিভ থেকে সুস্থ হয়ে দলে ফিরেছিলেন এডারসন। এছাড়া গ্যাব্রিয়েল জেসুসও করোনা আইসোলেশন কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফিরেছিলেন।
দিনের আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে ফুলহ্যামের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার। ২৫ মিনিটে হ্যারি কেনের গোল এগিয়ে গিয়েছিল স্পার্সরা। ৭৪ মিনিটে ইভান ক্যাভালেইরো ফুলহ্যামের হয়ে সমতা ফেরান। এই ড্রয়ে এভারটনের থেকে দুই পয়েন্ট কমে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে নেমে এসেছে টটেনহ্যাম।