চট্টগ্রামে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার

300

চট্টগ্রাম, ১৪ জানুয়ারি ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাকালের সর্বনিম্ন সংক্রমণ হারের রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৭৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষার করা হলে ৫৩ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণের হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এদিন করোনাক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর সর্বশেষ ৩২ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হলেও নমুনা পরীক্ষা হয় মাত্র ৭১৯ জনের। সংক্রমণ হার ছিল ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এদিন করোনায় একজনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে বলেন, ‘কোভিডের প্রথমদিকে চট্টগ্রামে পরীক্ষার খুব বেশি সুব্যবস্থা ছিল না। সাধারণ মানুষও পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না। সে সময় দু’চার জন পরীক্ষা করিয়েছেন এমন দিনও গেছে। এ সময়ের হিসাবকে আক্রান্তের হারের সঠিক হিসাব হিসেবে ধরা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘করোনার প্রকোপ শুরুর পর পরীক্ষার অনেক বেশি কেন্দ্র ও পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া চালু করতে আমাদের কিছুদিন সময় লেগেছে। মে মাস থেকে একাধিকবার অনেক কম নমুনায় কম বাহক শনাক্ত হয়েছে। তবে, সংক্রমণ হার মে মাসের পর গতকালেরটা সর্বনিম্ন। পরীক্ষিত নমুনা বিবেচনায় বলা যায় এটা করোনাকালের সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার।’
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৭৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৫৩ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৪ জন ও চার উপজেলার ৯ জন। এর মধ্যে পটিয়ায় ৩ জন এবং রাউজান, হাটহাজারী ও সীতাকুন্ডে ২ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩১ হাজার ৮৩৩ জন, যাতে শহরের বাসিন্দা ২৪ হাজার ৭৫৪ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৭৯ জন।
গতকাল করোনাক্রান্ত কোনো রোগী মারা যাননি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৫ জনই রয়েছে। এতে শহরের ২৬১ জন ও গ্রামের ১০৪ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৪৯ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ২৯ হাজার ৯৬৯ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ১৯ জন এবং হোম আইসোলেশনে থেকে ২৫ হাজার ৯৫০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে গতকাল যুক্ত হন ১৮ জন। ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪৩৪ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ১ হাজার ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জন করোনার জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৬৬ জনের নমুনার মধ্যে ১৬ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২১৭ জনের নমুনায় ২০ জন ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৫৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৩টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে আটটি নমুনা পরীক্ষা করা হলে দু’টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫২টি নমুনা পরীক্ষায় ৯টি, শেভরনে ২৩টি নমুনার মধ্যে ৭টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৯টি নমুনায় ৭টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ১৩৮ জনের নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে জানা যায়, বিআইটিআইডি’তে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ, চমেকে ৬ দশমিক শূন্য ১, চবি’তে শূন্য দশমিক ৯২, সিভাসুতে ৫ দশমিক ২৬, আরটিআরএলে ২৫ শতাংশ, ইম্পেরিয়ালে ১৭ দশমিক ৩১, শেভরনে ৩০ দশশিক ৪৩ শতাংশ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।