চট্টগ্রামে ৭২ দিনে করোনার সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার

296

চট্টগ্রাম, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ (বাসস) : চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা ও হার দু’টোই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টার পরীক্ষায় ৭৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। হার ৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ যা গত ৭২ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু ঘটেনি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সর্বশেষ এর চেয়ে কম সংক্রমণ হার নির্ণিত হয় ৩১ অক্টোবর। এদিন ৭১৯ টি নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এদিন করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়।
সংখ্যার দিক থেকে চট্টগ্রামে সর্বশেষ ৬৭ জনের নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২ জানুয়ারি। মৃত্যুশূন্য এদিনে সংক্রমণের হার ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। চট্টগ্রামে সর্বশেষ এর চেয়ে কম বাহক শনাক্ত হয় ২১ নভেম্বর ৬৪ জন। এদিন সংক্রমণ হার ছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং করোনাক্রান্ত কেউ মারা যাননি। গেল ডিসেম্বরে সর্বনিম্ন বাহক চিহ্নিত হয় ১২ ডিসেম্বর ৭৮ জন। এদিন সংক্রমণ হার ছিল ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়। সংখ্যা ও হারে এটাই ছিল চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সর্বনি¤œ অবস্থান। ৫ জানুয়ারি ৮৪ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ।
এর আগে ডিসেম্বর মাসে তিন দিন একশ’র নিচে রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ১২ ডিসেম্বর ৭৮ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ১৭ ডিসেম্বর পরীক্ষায় ৭৯ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ১৯ ডিসেম্বর ৯৬ জনের দেহে ভাইরাস মিলে। সংক্রমণের হার ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৭৫ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬৯ জন ও পাঁচ উপজেলার ৬ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩১ হাজার ৬৫৩ জন। এর মধ্যে শহরের ২৪ হাজার ৬০৫ জন ও ৭ হাজার ৪৮ জন গ্রামের। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ২ জন, ফটিকছড়ি, সীতাকু-, সন্দ্বীপ ও পটিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনাক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৬৩ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৫৯ জন ও গ্রামের ১০৪ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৫৪ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৭৯ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ হাজার ৯৯৯ জন এবং বাসা থেকে ২৫ হাজার ৮৮০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৭৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ৪২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪৪১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টার ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৬৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪২৪টি নমুনার ৮টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১০৩ জনের নমুনায় ৫ জন করোনাক্রান্ত চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ^বিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৫৫টি নমুনার ৫টিতে করোনার জীবাণু মেলে। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৪টিতে করোনার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৯৪, শেভরনে ৮০ এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ২২ জনের করে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে যথাক্রমে ১৬, ৮ ও ৯ জনের শরীরে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রামের ৫০টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ২ দশমিক ৯৫, চমেকে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, চবি’তে ৪ দশমিক ৮৫, সিভাসু’তে ৯ দশমিক শূন্য ৯, আরটিআরএল-এ ৩৬ দশমিক ৩৬, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৭ দশমিক শূন্য ২, শেভরনে ১০ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪০ দশমিক ৯১ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।