পোচেত্তিনোর অধীনে পিএসজির প্রথম জয়, শীর্ষেই থাকলো লিঁও

408

প্যারিস, ১০ জানুয়ারি ২০২১ (বাসস) : নতুন কোচ মরিসিও পোচেত্তিনোকে ঘরের মাঠের অভিষেকে প্রথম জয় উপহার দিয়েছে পিএসজি। কাল পার্ক ডি প্রিন্সেসে লিগ ওয়ানের ম্যাচে টেবিলের মাঝামাঝিতে থাকা ব্রেস্টকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে পিএসজি। অন্য দিকে রেনের সাথে উত্তেজনাকর ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করে শীর্ষেই রয়েছে লিঁও।
রেনের সাথে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ড্র করে লিঁও। এ নিয়ে টানা ১৬ ম্যাচে তারা অপরাজিত থাকলো। মোয়েস কিন, বদলী খেলোয়াড় মাউরো ইকার্দি ও পাবলো সারাবিয়ার গোলে জয় নিশ্চিত জয় পিএসজির। লিঁও যদি ড্র করতে না পারতো তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষে উঠে আসতো প্যারিসের জায়ান্টরা।
মৌসুমের দ্বিতীয়ভাগে এসে ১৯ ম্যাচে ৩৯ পয়েণ্ট নিয়ে লিঁওর থেকের এক পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পিএসজি। তৃতীয় স্থানে থাকা লিলির থেকে তারা গোল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। গতকাল নেইমসকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে লিলি।
নেইমারের অনুপস্থিতিতে পিএসজি এখনো তাদের প্রত্যাশানুযায়ী পারফর্ম করতে পারছেনা। প্যারিসের প্রচন্ড ঠান্ডা আবহাওয়ায় দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে তাই জয়ের ব্যবধানটা বড় হলেও ব্যক্তিগত পারফরমেন্সে মোটেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি পোচেত্তিনো। করোনাভাইরাসের কারনে রাতের বেলা প্যারিস জুড়ে কার্ফিউ জারি থাকায় দর্শকদের মাঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দুই দশক আগে পিএসজির খেলোয়াড় হিসেবে দারুন জনপ্রিয় পোচেত্তিনো তাই কোচ হিসেবে নিজের প্রথম জয়টা সমর্থকদের সাথে ভাগ করে নিতে পারলেন না।
যদিও সপ্তাহের শুরুতে সেইন্ট-এতিয়েনের সাথে ১-১ গোলে ড্র করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেলেন আর্জেন্টাইন এই কোচ। ম্যাচ শেষে তাই স্বস্তিতে থাকা পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘আমরা এখনো খুব বেশীদিন একসাথে কাজ করার সুযোগ পাইনি। এর মধ্যেই দারুন কঠিন দুই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে ফেলেছি। দুটি ম্যাচই দারুন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও খেলোয়াড়দের প্রচেষ্টায় আমি সন্তুষ্ট। এটা খুব একটা উন্নত পারফরমেন্স ছিল না। কিন্তু জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ।’
পার্ক ডি প্রিন্সেসে প্রথমবারের মত ম্যাচে ফিরে আসা প্রসঙ্গে পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘এটা সত্যিই আমার কাছে এক আবেগঘন মুহূর্ত। এই স্টেডিয়ামের পরিবেশ সব সময়ই বিশে^র অন্যতম সেরা একটি ফুটবলীয় পরিবেশ উপহার দেয়। এখানকার প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি দর্শককে আমি দারুন মিস করি। কিন্তু এই ক্লাব আমাকে নতুন করে দারুনভাবে স্বাগত জানিয়েছে। এই শহরটিতে ফিরে আসতে পেরে আমি দারুন আনন্দিত।’
বুধবার ফরাসি সুপার কাপের সমান মর্যাদাসম্পন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মার্শেইর মুখোমুখি হবে পিএসজি। সাধারণত এই ম্যাচটি মৌসুমের পর্দা উন্মোচনের ম্যাচ হিসেবে পরিগনিত হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতিতে এবার একটু দেরীতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পোচেত্তিনোর সামনে সুযোগ থাকবে পিএসজিকে প্রথম কোন শিরোপা উপহার দেবার।
এনিয়ে টানা চার সপ্তাহ ইনজুরির কারনে মাঠের বাইরে রয়েছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। তবে বুধবারের ম্যাচের আগে তার ফিট হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় ডিফেন্ডার থিলো কেহরার মাঠের বাইরে চলে গেছেন। ব্রেস্টের বিপক্ষে ম্যাচের ঠিক আগে তার পজিটিভ হবার খবর এসেছে। পোচেত্তিনো আরো একবার প্লেমেকার হিসেবে মার্কো ভেরাত্তিকে মূল দলে নামিয়েছিলেন। সেন্ট্রাল স্ট্রাইকার কিনের আগে মধ্যমাঠে ভেরাত্তিই ছিলেন মূল ভরসা। ১৬ মিনিটে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্রস থেকে মারকুইনহোসের হেড পোস্টে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলে কিন বল জালে জড়ান। এভারটন থেকে অক্টোবরে পিএসজিতে যোগ দেবার পর মৌসুমে এটি তার ১১তম ও লিগ ওয়ানে নবম গোল। টেবিলের মাঝামাঝিতে অবস্থান করা ব্রেস্ট তার আগেই গোল করে এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু রোমেইন ফেইভরের প্রচেষ্টা আটকে দেন কেইলর নাভাস। শেষ ১০ মিনিটে পিএসজি আক্রমনের ধার বাড়িয়ে দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় কিলিয়ান এমবাপ্পের এসিস্টে বদলী খেলোয়াড় ইকার্দির দ্বিতীয় গোলের দুই মিনিট পর ৮৩ মিনিটে সারাবিয়া দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন।
রেনের রোহায়ন পার্কে ক্লেমেন্ট গ্রিনিয়ার ও বেঞ্জমিন বুরিগিয়াডের দুই গোলে স্বাগতিকরা যখন ৫৫ মিনিটে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল তখন মনে হয়েছিল লিঁওর অপরাজিত থাকার যাত্রা হয়ত বিরতি দিতে যাচ্ছে। কিন্তু ৭৯ মিনিটে মেমফিস ডিপের মৌসুমের ১১তম গোলের কিছুক্ষনের মধ্যেই জেসন ডেনায়ায়র লিঁওর হয়ে সমতা ফেরান।
আগের ম্যাচের এ্যাঞ্জার্সের কাছে পরাজয়ের পর কাল তুরষ্কের স্ট্রাইকার বুরাক ইয়েমাজের একমাত্র গোলে নিমেসকে পরাজিত করে জয়ের ধারায় ফিরেছে লিলি।