বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থার জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

188

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-বই বিতরণ
শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থার জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ছাত্র-ছাত্রীদের আহ্বান জানাচ্ছি তারা যাতে করোনাকালে ঘরে বসে চলমান পাঠদান (অনলাইন এবং টেলিভিশন) কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীগণের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বা অভিঘাত মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং একজন ফোকাল পয়েন্ট শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই দেশের শীর্ষস্থানীয় সাইকোলজিস্টগণের সহায়তায় একটি কাউন্সেলিং ম্যানুয়াল প্রণীত হয়েছে।
করোনাকালীন বিশেষ ব্যবস্থায় ১ হাজার ৬৪৬টি স্কুল-কলেজকে এমপিওভুক্তকরণের মাধ্যমে ২ হাজার ৫৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ও অবসর সুবিধা নিশ্চিত করাসহ এই সময়ে সরকার প্রদত্ত অন্যান্য সুবিধাদিরও কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষা ধারার ৬৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃত্তিমূলক কোর্স চালু করে ইতোমধ্যে ৬৭৬ জন ট্রেড ইন্সট্রাকটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে ৫১৭ কোটি ৩৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা অবসর সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। পাশপাশি, ৫ হাজার ৪৪৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর কল্যাণ ভাতার আবেদন নিষ্পত্তি করে ২১৮ কোটি ৬৩ লক্ষ ৮ হাজার ১৩৫ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল ধরনের বৃত্তির অর্থ ‘জিটুপি’ পদ্ধতিতে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫২৬ জন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে অনলাইনে ‘ইএফটি’ এর মাধ্যমে ‘ব্যাংক একাউন্টে’ প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে অনলাইনে করোনাকালীন প্রেরণ করার তথ্য উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সবাইকে আমি অনুরোধ করবো যেখানে জনসমাগম বেশি বা লোকজন বেশি সেখানে মুখে মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর পর হাত সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কারণ, এটাই করোনার ক্ষেত্রে আমাদের সুরক্ষা দেয়।’
তিনি এই শীতকালে লেবু ও কমলালেবুসহ বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত খাবার খাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সকলে যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, সেজন্য আমি আমাদের অভিভাবক শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সকলের প্রতি অনুরোধ জানাবো। আর সব সময় ঘরে বসে না থেকে যেকোন সময়ে একটু রোদে বা খোলা বাতাসে থাকতে হবে। এটি আমাদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে পারে।’
তিনি করোনাকালেও যথযসময়ে বই মুদ্রন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারায় শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আজকের শিশুরাই আগামী দিনের কর্ণধার। এদের মধ্য থেকেই আগামীতে কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হবে। কাজেই, সেইভাবে তাঁদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও আমরা সকলের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারলাম। কাজেই, ছোট্ট সোনামণিরা, তোমরা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে। মানুষের মত মানুষ হবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি এ সময় দেশবাসীকে ইংরেজী নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা ও জানান।
তিনি বলেন, ‘যারা গৃহহীন বা ভূমিহীন তাঁদেরকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি। মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও ঠিকানা বিহীন থাকবে না।’
‘মুজিববর্ষে দেশের সকল ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে আলো জ¦ালার পাশাপাশি সমগ্র দেশে শিক্ষার আলো জ¦ালাও তাঁর সরকারের অন্যতম লক্ষ্য,’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে শতভাগ বিদ্যুৎ প্রদানের মাধ্যমে দেশের সকল ঘর যেমনি আলোকিত করবো, তেমনি দেশের প্রতিটি ছেলে-মেয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। দেশে ও বিদেশেও তারা নাম করবে এবং এর মাধ্যমেই বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৪০৫/আরজি