সীমিত আকারে নববর্ষ উদযাপনের জন্য ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান

408

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস): সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে ইনডোরে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা, মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আজ ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোন ধরণের জমায়েত, সমাবেশ ও উৎসব করা যাবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠানসমূহ সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ পালনের জন্য ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
নববর্ষ উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্য বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। তারা আনন্দের নামে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা অথবা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে অভদ্রজনোচিত আপত্তিকর আচরণ করে থাকে। এ সকল নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কর্মকান্ড একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
এ অবস্থায় ৩১ ডিসেম্বর রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালনাসহ যে কোন ধরণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোন ধরণের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বদ্ধপরিকর।
এ লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ডিএমপি’র বিশেষ নির্দেশনাসমূহ হচ্ছে:-
উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান করা বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।
কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি অথবা পটকা ফোটানো যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। তবে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে পারবে।
গুলশান ও বনানী এলাকায় ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। এসব এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন।
একইভাবে এ সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সকল নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে উল্লেখিত এলাকায় আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।
রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।
গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বাসিন্দাদেরকে রাত ৮টার মধ্যে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করা হলো।
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোন বার খোলা রাখা যাবে না। রাত ১০টার পর সকল ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকবে।
সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে কোন ক্রমেই ডিজে পার্টি করতে দেয়া যাবে না।
ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে ১ জানুয়ারি ভোর ৬ টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হলো।
উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা হতে পরদিন ১ জানুয়ারি ভোর ৫ টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। সেক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকদের রাত ৮টার মধ্যে এই এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
রাত ৮টা হতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে মহাখালী এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নং রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, ঢাকা গেট, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং উক্ত এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, উল্লেখিত এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।
একইভাবে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে পরদিন ভোর ৬ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পরিচয় প্রদর্শন এবং সনাক্তকরণ পূর্বক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এজন্য পরিচয়পত্র সাথে রাখার জন্য সকলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা হতে টিএসসি, রমনা স্কয়ার, ঢাকা মেডিকেল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, বকশী বাজার ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে কোন প্রকার যানবাহন প্রবেশ করবে না, শুধু বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।
হাইকোর্ট ক্রসিং হতে আগত সকল প্রকার যানবাহন দোয়েল চত্বর বামে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চাঁনখারপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।
কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালালে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সড়ক ব্যবহার সংক্রান্ত যে কোন জরুরি প্রয়োজন হলে ডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬০, এডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬১, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৭২, এসি ট্রাফিক (মহাখালী)-০১৩২০-০৪৪৩৭৫, ডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬০, এডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬১, ডিসি (গুলশান)-০১৩২০-০৪১৪২০ ও ডিসি (রমনা)-০১৩২০-০৩৯৪৪০ নম্বরে ফোন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন নির্বিঘœ করতে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।