বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছে বলেই মানুষ এর সুফল পাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

140

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-একনেক-ভাষণ
আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছে বলেই মানুষ এর সুফল পাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, তাঁর সরকার এই ডিসেম্বরের মধ্যেই ‘৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করার একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল, যাতে ২০২১ সালের শুরু থেকেই এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। কারণ, এরমধ্যেই ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাটি শেষ হয়ে যাবে।
‘জাতির পিতার হাত ধরেই এদেশে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের গোড়াপত্তন’, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এদেশে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পুনর্গঠনকালেই যেমন দেশের সংবিধান দিয়ে যান তেমনি আইন-কানুন যথাযথভাবে তৈরী করে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন দেশের উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। সে সময়ই তিনি প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন (১৯৭৩-’৭৮) এবং জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনও গঠন করেন।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য জাতির পিতা সেই পরিকল্পনা পুরো করে যেতে পারেননি, উপরন্তু তাঁকে হত্যার পর সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। কার্যত পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর আর যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।’
’৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। কিন্তু তারা সেভাবে আর কোন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা না নিয়ে বরং অ্যাডহক ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ চালায় এবং ’৯৬ সালে একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগ আবার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়, বলেন তিনি।
সে সময় পরিকল্পনা প্রণয়নের সহায়তাকারিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ছাড়া একটা দেশ উন্নত হতে পারে না। তাই, ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই আমরা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন (’৯৭-২০০২) করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই।’
সরকার প্রধান বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসলে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাতিল করে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে শুরু করে। যার ফলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়সহ মাঝে অনেক বছর চলে গেলেও আর আর কোন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। এরপর ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে ২০১০ সালে পুণরায় আওয়ামী লীগ সরকার ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
সফলভাবে এমডিজি বাস্তবায়নের পর তাঁর সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত ‘এসডিজি-২০৩০’ বাস্তবায়নেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি এবং এসডিজি উভয় পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়ই তাঁর সেখানে (জাতিসংঘে) থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল ।
তিনি বলেন, ‘এসডিজি’তে যেসব বিষয় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে তার মধ্যে যেসব বিষয় আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য সেগুলোতে গুরুত্ব দিয়েই আমাদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাগুলো প্রণয়ন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস একটা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। সেটা শুধু আমাদের নয়, সমগ্র বিশ^ব্যাপী।’
‘জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে যান সেখান থেকে তাঁর সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব যেখানে একেবারেই থমকে গেছে সেখানে বাংলাদেশ তার অর্থনীতির গতিধারা সীমিত আকারে হলেও চলমান রাখতে পেরেছে। যদিও কাঙ্খিত ৮ দশমিক ২ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়নি, তথাপি সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য তিনি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
করোনা মহামারীর মধ্যেও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন শেষ করতে পারায় সংশ্লিষ্টদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি ।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৮০৫/আরজি