করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩০ জন, সুস্থ ১,২৪৫

363

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৯৬তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৪৫ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৩ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ২৭ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ৫০৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান ছিল।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৪৫ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ০৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৫৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৮১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৬১৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ৯৩২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩১ লাখ ৯৯ হাজার ১১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ১১ হাজার ২৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬০৮টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০৭টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ০২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮২০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৭৮১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ১০২ ও বেসরকারি ৬৫টিসহ ১৬৭টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৮৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৬১৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৯৭১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ৩০০২ দশমিক ০১ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৬৬৯ দশমিক ০৯ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ০৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৯ জন, আর নারী ১১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৭১৭ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭৯২ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ১৩ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩০ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৫ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৭ জন; যা দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৯ জন; যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৫ জন; যা ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৮১ জন; যা ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৯০৫ জন; যা ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৪ হাজার ৯৭ জন; যা ৫৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৩ জন, এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৪ হাজার ১১৮ জন; যা ৫৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৪০২ জন; যা ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪৩২ জন; যা ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫২৯ জন; যা ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩৬ জন; যা ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৯০ জন; যা ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩৩৮ জন; যা ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬৪ জন; যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৯৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫১০ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৭৮৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১০২টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৪৩১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৩৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৫৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৮৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮১ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৬টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৫২৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩২১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ২০৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৮২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৮৮ জন এবং খালি আছে ২৯৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫১৬টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৭৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬৩৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd  এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ২৪৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৮৫০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৭ জন, রংপুর বিভাগে ৪৯ জন, খুলনা বিভাগে ৪৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ জন, সিলেট বিভাগে ৩৩ জন এবং ময়মনসিংহে ১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭৪৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬০৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২ হাজার ৮৯৭ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৮০৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৯২ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১১৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২১১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৮৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৫৬৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১১ হাজার ৫১৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৬১৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৫৪টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৮১৩টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৮টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৬৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ১ হাজার ৯১৫ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৯২ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৮ লাখ ৭১ হাজার ৯৫৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ৩১৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ৯৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫৪ জন এবং ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৮১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।