কক্সবাজারে মাতারবাড়ি জেটিতে নোঙর করেছে প্রথম পণ্যবাহি জাহাজ

378

কক্সবাজার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস): জেলায় মহেশখালী দ্বীপে নির্মাণাধীন মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর জেটিতে আজ প্রথম নোঙর করেছে পণ্যবাহী একটি জাহাজ।
কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মাণ সরঞ্জাম নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় নোঙর করে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘ভেনাস ট্রাইয়াম্প’।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দরের নির্মাণকাজ ২০২৫ সালে পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও চারবছর আগেই জাহাজ নোঙর করলো এই জেটিতে। পণ্যবাহি জাহাজটি ইন্দোনেশিয়া থেকে স্ট্রিম জেনারেটরের যন্ত্রাংশ, মেশিনারিজ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ সরঞ্জাম নিয়ে এসেছে।
‘ভেনাস ট্রাইয়াম্প’ নামক জাহাজটির সহকারী ক্যাপ্টেন আতাউল হক ছিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন,‘বিশ্বের সঙ্গে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সংযোগ সাধিত হলো।আমরা এটাকে মাইলফলক হিসাবে দেখছি।’
তিনি জানান, এখন থেকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম ও বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নিয়মিত ভাবে পণ্যবাহি জাহাজ মাতারবাড়ি জেটিতে ভিড়বে। বন্দর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে বড় আকারের বাণিজ্যিক জাহাজও এখানে নোঙর করবে।
তিনি বলেন, মাতারবাড়ি জেটিতে জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধার্থে ২৫০ মিটার চওড়া ও ১৮ মিটার গভীর করে চ্যানেল খনন করা হয়েছে। এই চ্যানেল দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে দ্বিগুণ গভীরতায় চলাচল করে- এমন জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে। মাতারবাড়িতে বর্তমানে সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ মিটার গভীর ও ১৯০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে।
মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইতিমধ্যে দুইটি জেটি নির্মিত হয়েছে।এর অন্যপাশে নির্মান করা হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর। এই সমুদ্র বন্দরের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই প্রথম একটি জাহাজ নিরাপদে জেটিতে নোঙর করায় সফলতা একধাপ এগিয়ে গেল।’
মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পণ্য উঠানামার জন্য নির্মিত হয়েছে ১৮০ মিটার দীর্ঘ দু’টি অস্থায়ী জেটি। এর একটিতে ভিড়েছে প্রথম পণ্যবাহি জাহাজ ‘ভেনাস ট্রাইয়াম্প’। এর মাধ্যমে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর এই মহা পরিকল্পনার একটি।
তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের নির্মাণ কাজ ২০২৫ সাল নাগাদ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ ও মেশিনারিজ আমদানির জন্য ইতোমধ্যে সাগরে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে চ্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে দ’ুটি জেটি। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আমদানি করা যন্ত্রপাতি নিয়ে এই প্রথম একটি জাহাজ জেটিতে ভিড়ল। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়সীমার আগেই এটির ব্যবহার শুরু করতে পারা নিঃসন্দেহে বড় অগ্রগতি।’