কারা কর্তৃপক্ষকে আট দফা নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট রায় প্রকাশ

445

ঢাকা, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : কারা সংশ্লিষ্ট সকল আইন কঠোর ভাবে প্রতিপালন, কারাগারে অবৈধ মাদকদ্রব্যের সরবরাহ বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে আটটি নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক আসামির ওকালত নামায় ডেপুটি জেলারের সই না থাকা নিয়ে গত ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টের দেয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ রোববার প্রকাশিত হয়।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বাসস’কে এ রায় বিষয়ে জানান।
গত ১৯ অক্টোবর আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে জামিন পেয়ে বের হওয়ায় আসামিকে চার সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশও দেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী এটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।
ডেপুটি জেলারের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ আলী আজম। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও শামীমা আক্তার।
নির্দেশনাগুলো হলোঃ
১. বিচারাধীন মামলায় বা দন্ডিত কারাবন্দিদের নাম, ঠিকানা, মামলার নম্বর, মামলার ধারা, কোন আদালতে মামলা বিচারাধীন বা কোন আদালতের রায়ে কি দন্ড হয়েছে, কারা মহাপরিদর্শক, জেলার, সহকারী জেলারকে সেসব তথ্য রেজিস্ট্রারে রাখতে হবে।
২. কারা কর্তৃপক্ষকে দন্ডিত বা বিচারাধীন মামলায় কারাবন্দির কারাগারে আসা ও বের হওয়ার তারিখ রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. যথাযথভাবে যাচাইয়ের পর নিশ্চিত হয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বা কারা কর্মকর্তাকে দন্ডিত ব্যক্তি বা বিচারাধীন মামলায় কারাবন্দির ওকালতনামায় সই করতে হবে বা সিল দিতে হবে।
৪. সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ অথবা কারা কর্মকর্তা ওকালতনামার যেখানে সই ও সিল দেবেন তার পাশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পুরো নাম, কারাগারের ল্যান্ডফোন ও মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করবেন।
৫. কোনো অশোভন, অযাচিত পরিবেশ-পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেজন্য যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি কারাগার ও কারা প্রাঙ্গণের শান্তি, নিরাপত্তা বজায় রাখতে কারা কর্তৃপক্ষকে সব সময় সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে।
৬. কারাগারের ভেতরে সব ধরনের অবৈধ মাদকদ্রব্যের সরবরাহ বন্ধে কারা কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. দর্শনার্থীদের কঠোরভাবে তল্লাশি করতে হবে এবং দর্শণার্থী কারো কাছে কোনো মাদকদ্রব্য, অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
৮. কারা আইন, ১৮৯৪, কারাবন্দি আইন, ১৯০০ এবং বাংলাদেশ জেল কোডসহ সংশ্লিষ্ট সব আইনের বিধান কারা কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
প্রতি তিন মাস পর পর এ রায় বাস্তবায়নের প্রতিবেদন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবরে দাখিল করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি), আইজি প্রিজন, সব জেলার ও ডেপুটি জেলারের কাছে আদেশটি পাঠাতে বলা হয়েছে।