বাসস দেশ-২৭ : জামিন পেলেন সংসদ সদস্য পাপুলের স্ত্রী-মেয়ে

120

বাসস দেশ-২৭
পাপুরের স্ত্রী-জামিন
জামিন পেলেন সংসদ সদস্য পাপুলের স্ত্রী-মেয়ে
ঢাকা, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় কুয়েতে গ্রেফতারকৃত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তারা আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এরআগে মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
গত ১০ ডিসেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর তারা নিম্ন আদালতে গেলে সেটি আদালতের ছুটি চলার সময় নাকি অবকাশের পরে হবে তা নিয়ে দ্ব›দ্ধ দেখা দেয়। এরপর আত্মসমর্পণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করার জন্য মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) তারা দু’জন হাইকোর্টে আসেন।
ওই বিষয়ে আদালতকে জানানোর পর তারিখ পিছিয়ে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন হাইকোর্ট।
ওইদিন (১০ ডিসেম্বর) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী ও মেয়েকে আত্মসমর্পণের সঙ্গে পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ প্রতীয়মান হয়নি বলে প্রতিবেদন দেয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক মো. আরেফিন আহসান মিঞাকেও তলব করেন আদালত।
আগামী ৪ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। আদালত এ বিষয়ে রুলও জারি করেন।
গত ২৬ নভেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলাম হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
১১ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদি হয়ে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন প্রধান।
অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতের কারাগারে আছেন পাপুল।
এদিকে সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল, স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম,শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া পাপুলসহ আটজনের আরো ৫৩ টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার দুদক ও সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম কেএম ইমরুল কায়েস এ নির্দেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন,দুদক পাপুল,তার স্ত্রী,মেয়ে ও শালিকার ৬১৭ টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ব্যাংক হিসাব গুলো জব্দের নির্দেশ দেন। এরমধ্যে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের ১৪৮টি,স্ত্রী সেলিনা ইসলামর ৩৪৫ টি, মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ৭৬ টি ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের ৪৮ টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন,পাপুলসহ আটজনের ৫৩ টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আবেদন করেন সিআইডি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন।
এরআগে পাপুল ও তার পরিবারের সদস্যের ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে মোট ৩৫৫ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা থাকায় মানি লন্ডারিং আইনে মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) পল্টন থানায় এ মামলা করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল, মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান মনির (পাপুলের ব্যক্তিগত কর্মচারী), জেসমিন প্রধান (পাপুলের শ্যালিকা), ওয়াফা ইসলাম (পাপুলের মেয়ে), কাজী বদরুল আলম লিটন (পাপুলের ভাই), গোলাম মোস্তফা (মানবপাচারে সংশ্লিষ্ট জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার)।
এছাড়া মামলায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়েছে। সেগুলো হলো- জে. ডব্লিউ লীলাবালী ও জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল। জে. ডব্লিউ লীলাবালীর প্রোপ্রাইটর পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এবং জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের প্রোপাইটার পাপুলের ভাই কাজী বদরুল আলম লিটন।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/১৯০০/কেকে