চট্টগ্রামে ১৫ দিন পর করোনায় মৃত্যুশূন্য একটি দিন

267

চট্টগ্রাম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : টানা ১৫ দিন পর গতকাল করোনায় একটি মৃত্যুশূন্য দিন অতিবাহিত করলো চট্টগ্রাম। গত ১৫ দিনে ২৪ রোগীর মৃত্যু হয়। এদিন করোনায় আকান্ত নতুন ১২২ জন শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নগরীর সাতটি ল্যাবে ১ হাজার ৪৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন চিহ্নিত ১২২ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১১০ জন এবং পাঁচ উপজেলার ১২ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ৫ জন, বোয়ালখালীতে ৪ জন এবং ফটিকছড়ি, সীতাকু- ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। ফলে জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ২৯ হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে শহরের ২২ হাজার ৭৫৪ জন ও গ্রামের ৬ হাজার ৭৩০ জন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনাক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৫১ জনই রয়েছে। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫১ জন। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা এখন ২৮ হাজার ৪৭১ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৩ হাজার ৮০৪ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে ২৪হাজার ৬৬৭ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৮ জন ও ছাড়পত্র নেন ২৮ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৩১৩ জন।
উল্লেখ্য, গত ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে সর্বশেষ মৃত্যুশূন্য দিন ছিল। ৯ ডিসেম্বর করোনাক্রান্ত ১ জনের মৃত্যু দিয়ে শুরু হওয়ার পর টানা ১৫ দিন এক বা একাধিক করোনারোগী মারা যান। এর মধ্যে গত ২১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ ৩ জন মারা যান। এছাড়া, ১০, ১১, ১৩, ১৬, ১৮, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর ২ জন করে এবং বাকী দিনগুলোতে একজন করে মৃত্যুবরণ করেন। সংখ্যার বিচারে এ সময়ে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ধরা পড়ে ১৪ ডিসেম্বর ২৮৫ জন এবং সর্বনি¤œ ১৭ ডিসেম্বর ৭৯ জন। সংক্রমণ হারে সর্বোচ্চ ছিল ১৪ ডিসেম্বর ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং সর্বনি¤œ ১৩ ডিসেম্বর ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৭৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৭৫ জনের নমুনায় ৪১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৭৯ জনের মধ্যে ১১ জন করোনাক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৬৯ টি নমুনার ১১ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ২৬ নমুনার ১৩ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
নগরীর বেসরকারি তিন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১০৬ নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ১৯ নমুনায় ৪ জন করোনাক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ১২০ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় একটি ছাড়া বাকী সবগুলোরই নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, চমেকে ১৪ দশমিক ৯১, চবি’তে ১৩ দশমিক ৯২, সিভাসু’তে ১৫ দশমিক ৯৪, আরটিআরএলে ৫০ শতাংশ, শেভরনে ২১ দশমিক ৭০ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।