জমির খতিয়ান সংগ্রহে জনগণের হয়রানি কমাবে ডিজিটাল রেকর্ড রুম : ভূমিমন্ত্রী

585

ঢাকা, বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০) : ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, জমির খতিয়ান সংগ্রহে জনগণের হয়রানি কমাবে ডিজিটাল রেকর্ড রুম। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে খতিয়ান সংগ্রহের ফলে মানুষের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে যাতায়াত কমে যাবে। এছাড়া দালালদের উৎপাতও থাকবে না বলে জানান তিনি। আজ বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের ২১টি জেলার রেকর্ড রুমের নাগরিক সার্ভিস ডিজিটাল সার্ভিসে রূপান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বকক্তৃতায় ভূমিমন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ ডিজিটাল সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
ঢাকা, ফরিদপুর, নরসিংদী, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, শরীয়তপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও সিরাজগঞ্জ – আজ থেকে এই ২১টি জেলায় সিএস, এসএ, আরএস ও দিয়ারা জরিপের ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬শ’ ২৪টি খতিয়ান ডিজিটাল রেকর্ডরুমে পাওয়া যাবে। মৌজার হিসেবে বিভিন্ন জরিপের অন্তর্গত মোট ৯৭ হাজার ৪৪৫ টি মৌজার খতিয়ান প্রকাশ করা হয়েছে। অনলাইনে খতিয়ানের জন্য আবেদন করে শুধু সার্টিফাইড কপি প্রয়োজন হলে তা সংগ্রহ করতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসতে হবে। এটুআই-এর সহযোগিতায় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ডিজিটাল রেকর্ডরুম স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, অনলাইনে খতিয়ান প্রাপ্তির সাথে সাথে যেন অনলাইনে খতিয়ানের অটোমেটেড সার্টিফাইড কপিও পাওয়া যায় সে বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা মানুষের আস্থার ঠিকানা হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়কে স্থাপন করতে চাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি আমরা ঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছি’।
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে আমরা খুব সচেতনভাবে কাজ করছি। সরকারের জননিরাপত্তা ও আইসিটি বিভাগকে এই বিষয়ে সহায়তার জন্য আমরা ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছি’।
সভাপতির বক্তৃতায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, অনলাইন খতিয়ান প্রদান ও ডিজিটাল রেকর্ড রুম তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য এ বছর ভূমি মন্ত্রণালয়ের দল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরষ্কার ২০২০’ পুরষ্কার অর্জন করে। জাতিসংঘ পুরস্কার অর্জনের পর এই পুরস্কার অর্জন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভালো কাজের একটি স্বীকৃতি।
এরআগে ডিজিটাল রেকর্ড রুম সংক্রান্ত কারিগরি ও অগ্রগতির উপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান মো. দৌলতুজ্জামান খাঁন।
অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থেকে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তসলীমুল ইসলাম ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং জুম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ড মো. আব্দুল মান্নান, রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান প্রমুখ বক্তৃতা দেন।
ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান বেগম উম্মুল হাছনা, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী পাটোয়ারীসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকবৃন্দ সহ মাঠ পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা জুম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
রেকর্ড নাগরিকের জন্য খুবই একটি স্পর্শকাতর একটি ডকুমেন্ট হওয়ায় এই সকল তথ্যকে নাগরিকের জন্য আরও বেশি কার্যকর করার জন্য ডিজিটাল রেকর্ড রুমের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। www.eporcha.gov.bd, www.land.gov.bd, www.dlrs.gov.bd, www.minland.gov.bd সাইট হতে জনগণ অনলাইনে এই সেবাটি গ্রহণ করতে পারবেন।
৬১টি জেলার সিএস, এসএ, আরএস ও দিয়ারা জরিপের মোট ৩ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ১শ’ ১৩টি খতিয়ান অনলাইনে পাওয়া যাবে। আজকের ২১ জেলার পর পর্যায়ক্রমে (তিন পার্বত্য জেলা ব্যতীত) বাকি ৪০টি জেলার রেকর্ডরুমকে ডিজিটাল রেকর্ড রুম হিসেবে চালু করা হবে।