কলকাতা উপ-হাইকমিশনে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে শেষ হলো দুদিনের বিজয় উৎসব

385

কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস): জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে কলকাতা উপ-হাইকমিশন আয়োজিত দু’দিনের বিজয় উৎসব।
উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় দিনের আলোচনা সভায় দুই দেশের বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য রাখেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী শোভন দেব চট্রোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহীর বীরপ্রতীক ও কলকাতার মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননাপ্রাপ্ত কলকাতার বিশিষ্ট সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত।
প্রধান আতিথি শোভন দেব চট্রোপাধ্যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের মূলায়ন করতে গিয়ে বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে আমি সরাসরি অংশগ্রহণ করিনি, কিন্ত অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছি। ছুটে গিয়েছি এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শরণার্থীদের পাশে থেকেছি অবিরত। বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ক্যা¤েপ পৌঁছে দেয়ার ব্যাবস্থা করেছি । আমরা টিম গঠন করে সমস্ত কাজ করেছি। সহায়তা করেছি।’
মন্ত্রী শোভন দেব বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিজয় ছিনিয়ে আনে। বাঙালির এই একগ্রতাকে আমি শ্রদ্ধা জানাই।’
কাজী সাজ্জাদ আলী জহীর বীরপ্রতীক বলেন, ‘এইদিনে আমি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় পালিয়ে দেশে ফিরে ভারতে চলে আসি। সেখানে আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নির্দেশনায় স¤পৃক্ত হই। মুক্তিবাহিনীর ক্যা¤েপ যৌথভাবে তাদের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা সবসময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি।’
সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাস গুপ্ত বলেন, ‘তখন আমি আনন্দবাজার পত্রিকায় কাজ করি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রণাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের খবরা-খবর সংগ্রহ করে তা আসল জায়গায় পৌঁছে দিতাম । ক্যা¤েপ গিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নিয়মিত খোজ খবর নিতাম।’
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে বিজয় দিবসের দ্বিতীয় দিনেও উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
প্রণতি ঠাকুর এবং সৌমিত্র ঘোষের আবৃত্তি ও ভারতের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচী ও শতাব্দী রায়ের সঙ্গীতের মূর্ছনা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানটিকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব সানজিতা জেসমিন।