কুমিল্লায় কৃষি ও শিল্প খাতের শ্রমজীবীরা নব উদ্যোমে মাঠে নেমেছেন

498

।। কামাল আতাতুর্ক মিসেল ।।
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : কুমিল্লায় অর্থনীতিকে সচল রেখেছে কৃষি অর্থনীতি। কৃষকরা ধান আলুসহ শাকসবজি, ফলের আবাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। জেলায় একজন কৃষি শ্রমিকদের দিনমজুরি কমপক্ষে ৬শ’ টাকা। করোনা পরিস্থিতিতেও কাজ পেতে সমস্যা হচ্ছে না বলেই নব উদ্যোমে মাঠে নেমেছেন নির্মাণ শ্রমিক, অটো চালক, রিকশাচালকসহ এসব শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষেরা।
কুমিল্লার কৃষি ও শিল্প খাতে বহুমুখী কাজ এখন। দেবিদ্বারের মাল্টা বাগানের মালিক শাহিনূর বাসসকে বলেন, আমার বাগানে বেশ কিছু শ্রমিক কাজ করছে। এতে তাদের স্বচ্ছলতা আসছে। এলাকায় দেখাদেখি অনেকেই নতুন নতুন বাগান গড়ে তুলছে। সেখানেও প্রচুর শ্রমিকের কাজ হচ্ছে। বুড়িচং উপজেলার শীকারপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক মনির হোসেন বাসসকে বলেন, কৃষি শ্রমিকের কাজ করে অভাব মোচন হয়েছে। এই দুঃসময়ে ভালো আছি। চান্দিনার কবির হোসেন বলেন, করোনা মহামারী কলেও কৃষিকাজ মানুষকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
কৃষক, মাছের খামারি, মুরগি ও ডিমের খামারিদের চেয়ে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা ভালো আছেন। দাউদকান্দি মৎস্য ক্ষেত্রে বেশ এগিয়েছে। মৎস্য চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে। জেলায় বছরে মাছের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৯৯ হাজার টন। আর উৎপাদন হচ্ছে ২ লাখ ১০ হাজার ৬৪২ টন মাছ। চাহিদার বিপরীতে অতিরিক্ত সোয়া লাখ টন মাছ বেশি উৎপাদিত হয়ে এখানকার প্রায় ৬০ লাখ জনগোষ্ঠীর আমিষ পূরণ করে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাকি সিংহভাগ চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
স্থানীয় মৎস্য চাষি ফজলু মিয়া বাসসকে বলেন, প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষের ফলে দাউদকান্দি ও আশপাশের জলাঞ্চলের মানুষের অভাব ঘুচেছে। হাসি ফুটেছে তাদের মুখে, সুখ ফিরেছে সংসারে। তার মতে, শিক্ষিত তরুণরাই এখন এ পেশায় বেশি ঝুঁকছে। ফলে কমেছে বেকারত্বও। তাদের দেখাদেখি আশপাশের এলাকার মানুষও এখন প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বলে জানান ফজলু মিয়া।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বাসসকে বলেন, শুধু দাউদকান্দিতে ৩ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হয়। এ উপজেলার শিক্ষিত তরুণরা মাছ চাষে সম্পৃক্ত হওয়ায় বেকারত্ব দূর হয়েছে। সেই সঙ্গে মাছের উৎপাদনও বাড়ছে। তাছাড়া জেলায় মাছের চাষ ও রোগ প্রতিরোধে মৎস্য বিভাগ চাষিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।