বাসস দেশ-৩৩ : লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

151

বাসস দেশ-৩৩
বিশ্ববিদ্যালয়-লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
লালমনিরহাট, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার টিটিসি কলেজ সংলগ্ন হাড়িভাঙা বিমান বাহিনীর লারমনিরহাট ইউনিট অফিস এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এয়ার ভাইস মার্শাল এএইচএম ফজলুল হকসহ বিমানবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। বিমান বাহিনী প্রধান এসময় বলেন, এই ভিত্তিপ্রস্তরের মধ্য দিয়ে জেলাবাসিকে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব বর্ষ উপহারের বাস্তবায়ন হয়েছে। নতুন প্রজন্ম প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারে দারুণ খুশি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে জেলা শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিতি লাভ করবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, যা বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন এবং অ্যারোস্পেস সম্পর্কিত প্রথম এবং একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দক্ষ বৈমানিক, বিমান প্রকৌশলী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে সকল স্তরের দক্ষ জনবল, বিমান তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের সকল স্তর ও মহাকাশ সম্পর্কিত সকল স্তরের উচ্চ শিক্ষা এবং সর্বোপরি এসব ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান প্রদানে এই বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষ জনশক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির বিস্তৃতি এবং বিমান সংস্থাগুলোর নতুন বাণিজ্যিক বিমান চাহিদা এবং সরবরাহের অভূতপূর্ব বিস্তৃতিতে সামগ্রিকভাবে বিমান শিল্পে দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৈমানিক, বিমান প্রকৌশলী ও মহাকাশ বিজ্ঞান শিক্ষা, প্রযুক্তি নির্ভর ও ব্যয়বহুল একটি শিক্ষা। এদেশের অত্যন্ত মেধাসম্পন্ন ও তীক্ষ্ম যুবসমাজকে পরিকল্পিত উপায়ে ব্যয় সংকুলানের মাধ্যমে এই ধরণের বিশেষায়িত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেন। এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস গবেষণায় সরকারের আন্তরিকতা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন এবং তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করেছেন।
বিমান বাহিনীর প্রধান বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লালমনিরহাটে বৈমানিক, বিমান প্রকৌশল ও মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানী, হাইর‌্যাংকিং বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যাভিয়েশন কোম্পানী ও বিভিন্ন অ্যাভিয়েশন অথরীটির সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিকমান অর্জনের প্রচেষ্টা ও প্রত্যয়ে ইউরোপীয় বহুজাতিক কোম্পানী এয়ারবাসের সাথে সহযোগিতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়াও কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়, সারে বিশ্ববিদ্যালয় এবং জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টারসহ ইউরোপের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মান অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়টি ইন্ডাষ্ট্রির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে একটি নজির স্থাপন করেছে। এর ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হবে বলে আমরা মনে করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এয়ার ভাইস মার্শাল এএইচএম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কল্যাণ ট্রাষ্টের মাধ্যমে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ শুরু করা হলো। মোট ৬৪৮ একর জমিতে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ডিপিপি একনেক সভায় পাস হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্তরের আদলেই নির্মাণ কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেননা, দেশি-বিদেশী শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষকগণ এখানে আসবেন, পড়বেন এবং গবেষণা করবেন। এজন্য আমরা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই সবকিছু করার চেষ্টা করছি।
২০২১ শিক্ষাবর্ষে লালমনিরহাটে বিএসসি ইন এএমই অ্যারোস্পেস, বিএসসি ইন এএমই অ্যাভিওনিক্স, বিএসসি ইন এমই, বিএসসি ইন ইইই এবং বিএসসি ইন সিএসই এই পাঁচটি বিভাগের ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এর আগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কল্যাণ ট্রাষ্টের কোম্পানী সচিব গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অবঃ) জোবায়েদের সঞ্চালনায় প্রধান নির্বাহী এয়ার কমোডর ফখরুদ্দিন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের লেআউট প্লান তুলে ধরেন। এতে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর, পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাশেদ প্রধান, বিমান বাহিনীর লালমনিরহাট রক্ষণা-বেক্ষণ ইউনিটের অধিনায়ক ইউং কমান্ডার মো. খায়রুল মামুন ও লালমনিরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সফুরা বেগম রুমী প্রমুখ।
বাসস/সংবাদদাতা/এএএ/২০১৫/কেএমকে