বাসস দেশ-৩২ (লীড) : ২৪ ঘন্টায় করোনায় সংক্রমণের মাত্রা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

178

বাসস দেশ-৩২ (লীড)
করোনা-আপডেট
২৪ ঘন্টায় করোনায় সংক্রমণের মাত্রা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা
ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমণের মাত্রা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ১৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৭ হাজার ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৩২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৯৬ শতাংশ কম।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৭২৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৪ লাখ ২১ হাজার ২৭৮টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৩৯ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫৯০ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ২৭ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ১৯২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গতকাল মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যুর হার দশমিক ০১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৬ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৩২ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৫ হাজার ২৫৬টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৭৭ ও বেসরকারি ৬৩টিসহ ১৪০টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ১৯১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ২৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩ হাজার ৮৩৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৯১৮ দশমিক ১২ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৫৩৪ দশমিক ২০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪২ দশমিক ২৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন, আর নারী ৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৪৮৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭০৩ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৩২ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৬ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৯ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৭ জন; যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬৪ জন; যা ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৪৬ জন; যা ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৮৩৮ জন; যা ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৮৯৯ জন; যা ৫৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৯২৬ জন; যা ৫৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৩৮ জন; যা ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪২২ জন; যা ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫১৩ জন; যা ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩১ জন; যা ৩ দশমিক ২১ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৮১ জন; যা ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩২৫ জন; যা ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫৬ জন; যা ২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৬০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৬২ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৩৯৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৮৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১১ জন ও শয্যা খালি আছে ৭৮টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ৩১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৩৬৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৪৮৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৮১ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯০৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৩৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৮টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৪৩৬টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৭৬১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৭ হাজার ৬৭৫টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭১টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৩ জন এবং খালি আছে ২৬৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৯২টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৬৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬১৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ২৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৬৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২৯ জন, রংপুর বিভাগে ১২ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, বরিশাল বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪১ জন, সিলেট বিভাগে ৪৯ জন এবং ময়মনসিংহে ২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬৩৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪১৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৫৫ হাজার ২৯৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ১২৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৭৯ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮৯ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৫৪১ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৪৪৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৪৪৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮২৬টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৫৩৪টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১১৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৪৭৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৩৫৮ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৩০ হাজার ৭১ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬২০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ২১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩২ জন এবং ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৫২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
বাসস/এএসজি/এমএসএইচ/১৯৫৬/এএএ