বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (২য় কিস্তি ও শেষ কিস্তি) : দেশের মাটিতে সকলেরই সমান অধিকার থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

217

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (২য় কিস্তি ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা- বিজয় দিবসের আলোচনা
দেশের মাটিতে সকলেরই সমান অধিকার থাকবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশসহ সারা বিশ^ করোনা মহামারী থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সকলের প্রতি তাঁর আহবান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন,‘ভ্যাকসিন আসার ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের চুক্তিও হয়ে গেছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদনও দিয়ে দিয়েছে এবং আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এটা আমরা পেয়ে যাব। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরেও সবথেকে বড় সুরক্ষা হচ্ছে মাস্ক পড়ে থাকা, হাতটাকে সাবান বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে একটু পরিস্কার রাখা, সামজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং বাইরে কম ঘোরাঘুরি করা।’
তিনি বলেন, দেশের মানুষকেও আমি বলবো সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মানতে হবে এবং জাতির পিতা যে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সেই স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো-এটাই আজকের বিজয় দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা।
জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের পথ রুদ্ধ করা, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরী দিয়ে সেই খুনীদের পুরস্কৃত করা, জাতির পিতার শুরু করে যাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে কারাগার থেকে তাদের মুক্ত করে দিয়ে রাজনীতি করার অধিকার প্রদান এবং ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র সম্পর্কেও আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের প্রারম্ভে বাঙালি জাতি রাষ্ট্রে স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, বঙ্গমাতা সহ ১৫ আগষ্টের সকল শহীদ, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোনকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারি দেশ, সরকার, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি বিশেষের অবদান স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি রাষ্ট্র বিশেষ করে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল এবং ভারতের জনগণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া সৌভিয়েত রাশিয়া সহ অন্য দেশগুলো চেকোশ্লোভাকিয়া, যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো থেকে শুরু করে প্রত্যেকে এমনকি সমগ্র বিশে^র জনগণও আমাদের সমর্থন দিয়েছিলেন। যেসব রাষ্ট্র আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তাদের জনগণ কিন্তু আমাদের পক্ষে ছিল।
তিনি বলেন, ‘সকলকে আমি স্মরণ করি এই কারণে যে, সকলের সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করে এদেশের মানুষের পাশে আমরা থাকবো।’
তিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেন,‘এদেশের মানুষ আর কারো কাছে মাথা নত করে চলবেনা। বিশ^ দরবারে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করেই বাঙালি জাতি চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন- ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকেনা,’ কাজেই আমরা ভিক্ষুক না থেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। আজকে আমাদের রিজার্ভ ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় ২০৬৪ মার্কিন ডলারে ঠেকেছে। পাশাপাশি আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি বা খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছি এবং সর্বোপরি উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে তাঁর সরকার সকলের জন্য যথাযথ ও সময়োপযোগী প্রণোদনা প্রদান করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে তাঁর সরকার মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে দেশের সকল গৃহহীণ, ভূমিহীনকে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের শতভাগের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৯৯ ভাগ গৃহে বিদ্যুতের আলো জ¦ালতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে করোনায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার সরকারের কর্মসূচিতে ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
তিনি করোনাকালে সংগঠনের নেতা-কর্মী সহ দেশে-বিদেশে মৃতুবরণকারি বাংলাদেশীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের সেবা করাই আওয়ামী লীগের কাজ। সেই সেবা আমরা করে যাচ্ছি এবং আগামীতেও করে যাব।’
বাসস/এএসজি-এফএন/২০০০/-শআ