বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (দ্বিতীয় কিস্তি) : ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না : বিজয় দিবসের ভাষণে প্র্রধানমন্ত্রী

151

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (দ্বিতীয় কিস্তি)
শেখ হাসিনা-জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ
ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না : বিজয় দিবসের ভাষণে প্র্রধানমন্ত্রী

এ বছরটি শুধু আমাদের জন্যই নয়, বিশ্ববাসীর জন্য এক দুর্যোগময় বছর এবং করোনাভাইরাস মহামারি স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার পাশাপাশি অর্থনীতির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অনেক উন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির মুখে পড়লেও বাংলাদেশে তাঁর সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ এবং কর্মসূচির ফলে এই নেতিবাচক অভিঘাত কিছুটা হলেও সামাল দিতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যা জিডিপি’র ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় আড়াই কোটি প্রান্তিক মানুষকে নগদসহ নানা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রাথমিক ধাক্কা সামলিয়ে আমাদের প্রবাসী আয়, কৃষি উৎপাদন এবং রপ্তানি বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। গত অর্থবছরে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হারে আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।’
‘বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রক্ষেপণ বলছে ২০২০ সালে বাংলাদেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজ পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে। আমাদের স্বপ্নের ও গর্বের পদ্মা সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ। ঢাকায় মেট্রোরেলের কাজ আবার পুর্ণদ্দোমে শুরু হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ এই মহামারিতে একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলির নদীর তলদেশে ট্যানেল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশের মহাসড়কগুলো চার-লেনে উন্নয়নের কাজও পুরোদমে এগিয়ে চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, চলতি বছর জাতি তার জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা উদ্যাপন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে। আগামী বছর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি। করোনাভাইরাসের এই মহামারি না থাকলে আমরা যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন করবো, ইনশাআল্লাহ। একইসঙ্গে চলবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা।
‘বঙ্গবন্ধু বলতেন ভিক্ষুক জাতিকে কেউ সম্মান করে না,’-জাতির পিতার ভাষণের এই বিখ্যাত উদ্ধৃতি তুলে ধরে তাঁর কন্যা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সেই দুর্নাম ঘুচিয়েছি। আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ আজ একটি সমীহের নাম। আজকের বাংলাদেশ আর অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আজকের বাংলাদেশ স্বাবলম্বী বাংলাদেশ। একটা সময় ছিল আমাদের উন্নয়ন বাজেটের সিংহভাগ আসতো বিদেশি অনুদান থেকে। আজ বাজেটের ৯৭ ভাগ মেটানো হয় নিজস্ব অর্থায়নে। বাংলাদেশ কারও দয়া বা করুণার উপর নির্ভরশীল নয়।’
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। আমরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।’
চলবে/বাসস/এএসজি-এফএন/২১০০/আরজি