বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১ : গণপরিবহনে নারীর হেনস্থা কমাতে বিনিয়োগ বড়ানো দরকার ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : সপ্তাহের ছয় দিনই পাবলিক বাসে করে উত্তরা নয় নং সেক্টর থেকে বাসে করে টঙ্গীতে যাতায়াত করতে হয় গার্মেন্টস কর্মী জাহানারাকে (ছদ্মনাম)। সকাল বেলা প্রচন্ড ভিড়ে অন্যদের মত তাকেও হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠতে হয়। কিন্তু প্রায় সময়ই সে শরীরে অনাকাঙ্খিত স্পর্শ পায়। সকালেই মনটা একেবারে বিষিয়ে উঠে তার। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করলেও স্পর্শকারীরা উল্টো বাজে কথা বলে। ঝগড়া করে। একটি প্রাইভেট এনজিও’তে চাকরি করেন মমিনা (ছদ্মনাম)। বাসা নগরীর বাসাবো এলাকায়। আর অফিস কাওরান বাজারে। প্রতিদিন পাবলিক বাসে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বাসের হেলপার সাহায্য করার নামে প্রায় দিনই গায়ে হাত দিতে চায়। এসব বিষয় নিয়ে যারপরানই বিরক্ত মমিনা। এসব ঝক্কি-ঝামেলা শেষ করে যখন অফিস পৌঁছান তখন আর কাজ করার মন-মানসিকতা থাকেনা। পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী চুমকী একজন গৃহিনী । স্বামী থাকেন দেশের বাইরে। তিনি দুই সন্তান আর শ্বশুড় এবং শ্বাশুড়ী নিয়ে থাকেন নগরীর খিলগাঁও এলাকায়। স্বামী বাইরে থাকায় সংসারের বাজার থেকে শুরু করে সবই করতে হয় তাকে। কিন্তু বেশী সমস্যা হয় যখন কাঁচা বাজারে যান তখন। একটু ভিড় হলেই শিকার হতে হয় অনাকাঙ্খিত স্পর্শের। বেসরকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এ্যাকশন এইড বাংলাদেশে এর এক গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৫০ শতাংশ নারী মার্কেটে, বাজার এবং অন্যান্য স্থানে অনাকাঙ্খিত স্পর্শেও শিকার হন। এ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ‘গণ পরিসরে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রেক্ষিতে গণসেবা’ নামক গবেষণার ফলে দেখা যায় মার্কেট, বাজার এবং অন্যান্য স্থানে ৫০ শতাংশ নারী অনাকাঙ্খিত স্পর্শের শিকার হন। গবেষণায় ৫০ শতাংশ নারী এ মতামত দিয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে ৪২ শতাংশ নারী সেবা প্রদানকারী কর্তৃক দুর্ব্যবহারের শিকার হন। গত বছরের গোড়ার দিকে খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাজার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং হাসপাতাল সেবা নিয়ে ৪০০ মানুষের ওপর এ গবেষণাটি করা হয়। গবেষণা বলছে, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রতিমা পাল মজুমদার বলেন, গণ সেবা নিশ্চিত করতে রাজস্ব আয় বাড়ানোর নতুন উদ্ভাবনী কৌশলের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের পরিচালক আজগর আলী সাবরি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণসেবা নিশ্চিত করতে অর্থায়ন ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেন। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক নুজহাত জেবিন বলেন, কার্যকরী গণসেবা নিশ্চিত করতে গত ২৩ জুন থেকে দেশব্যাপী ‘গণসেবা প্রচারাভিযান’ পরিচালনা করে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ। বাসস/সুঘো/স্বব/আহো/১০০০/স্বব

206

বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১
গণ পরিবহন-নারী
গণপরিবহনে নারীর হেনস্থা কমাতে বিনিয়োগ বড়ানো দরকার
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : সপ্তাহের ছয় দিনই পাবলিক বাসে করে উত্তরা নয় নং সেক্টর থেকে বাসে করে টঙ্গীতে যাতায়াত করতে হয় গার্মেন্টস কর্মী জাহানারাকে (ছদ্মনাম)। সকাল বেলা প্রচন্ড ভিড়ে অন্যদের মত তাকেও হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠতে হয়। কিন্তু প্রায় সময়ই সে শরীরে অনাকাঙ্খিত স্পর্শ পায়। সকালেই মনটা একেবারে বিষিয়ে উঠে তার। মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করলেও স্পর্শকারীরা উল্টো বাজে কথা বলে। ঝগড়া করে।
একটি প্রাইভেট এনজিও’তে চাকরি করেন মমিনা (ছদ্মনাম)। বাসা নগরীর বাসাবো এলাকায়। আর অফিস কাওরান বাজারে। প্রতিদিন পাবলিক বাসে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু বাসের হেলপার সাহায্য করার নামে প্রায় দিনই গায়ে হাত দিতে চায়। এসব বিষয় নিয়ে যারপরানই বিরক্ত মমিনা। এসব ঝক্কি-ঝামেলা শেষ করে যখন অফিস পৌঁছান তখন আর কাজ করার মন-মানসিকতা থাকেনা।
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী চুমকী একজন গৃহিনী । স্বামী থাকেন দেশের বাইরে। তিনি দুই সন্তান আর শ্বশুড় এবং শ্বাশুড়ী নিয়ে থাকেন নগরীর খিলগাঁও এলাকায়। স্বামী বাইরে থাকায় সংসারের বাজার থেকে শুরু করে সবই করতে হয় তাকে। কিন্তু বেশী সমস্যা হয় যখন কাঁচা বাজারে যান তখন। একটু ভিড় হলেই শিকার হতে হয় অনাকাঙ্খিত স্পর্শের।
বেসরকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এ্যাকশন এইড বাংলাদেশে এর এক গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৫০ শতাংশ নারী মার্কেটে, বাজার এবং অন্যান্য স্থানে অনাকাঙ্খিত স্পর্শেও শিকার হন।
এ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ‘গণ পরিসরে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রেক্ষিতে গণসেবা’ নামক গবেষণার ফলে দেখা যায় মার্কেট, বাজার এবং অন্যান্য স্থানে ৫০ শতাংশ নারী অনাকাঙ্খিত স্পর্শের শিকার হন। গবেষণায় ৫০ শতাংশ নারী এ মতামত দিয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে ৪২ শতাংশ নারী সেবা প্রদানকারী কর্তৃক দুর্ব্যবহারের শিকার হন।
গত বছরের গোড়ার দিকে খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাজার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং হাসপাতাল সেবা নিয়ে ৪০০ মানুষের ওপর এ গবেষণাটি করা হয়। গবেষণা বলছে, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রতিমা পাল মজুমদার বলেন, গণ সেবা নিশ্চিত করতে রাজস্ব আয় বাড়ানোর নতুন উদ্ভাবনী কৌশলের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের পরিচালক আজগর আলী সাবরি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণসেবা নিশ্চিত করতে অর্থায়ন ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক নুজহাত জেবিন বলেন, কার্যকরী গণসেবা নিশ্চিত করতে গত ২৩ জুন থেকে দেশব্যাপী ‘গণসেবা প্রচারাভিযান’ পরিচালনা করে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।
বাসস ইউনিসেফ ফিচার/সুঘো/আহো/১০০০/স্বব