প্রিমিয়ার লিগ: ম্যানচেস্টার ডার্বি গোলশূন্য ড্র, এভারটনের কাছে পরাজিত চেলসি

268

লন্ডন, ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : মৌসুমের প্রথম ম্যানচেস্টার ডার্বিতে কোন দল জিততে পারেনি। শনিবার ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি গোলশশূন্য ড্র হয়েছে। এদিকে এভারটনের কাছে ১-০ গোলের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়েছে উড়তে থাকা চেলসি।
গত সপ্তাহে আরবি লিপজিগের কাছে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া ইউনাইটেড ম্যানেজার ওলে গানার সুলশার এমনিতেই চাপের মধ্যে আছেন। যে কারনে ঘরের মাঠের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডার্বিতে জিতে কিছুটা হলেও এই চাপ কমাতে মরিয়া ছিলেন সুলশার। কিন্তু দুই দলই নিজেদের প্রমানে ব্যর্থ হওয়ায় মৌসুমের প্রথম ডার্বি ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত হতাশায় পরিণত হয়েছে।
সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ চারটি ম্যাচে মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছে ইউনাইটেড। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগের এবারের মৌসুমে ওল্ড ট্রাফোর্ডে খেলা ছয়টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় তুলে নিয়েছে।
প্রথমার্ধের মাঝামাঝি রিয়াদ মাহারেজের একটি দারুন সুযোগ ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া আটকে দিয়েছিলেন। পুরো ম্যাচে বলতে গেলে এই একটি আক্রমনই করতে পেরেছে সিটিজেনরা। যে কারনে বলাই যায় সুলশারের শিষ্যরা সিটিজেনদের বিপক্ষে ভালই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। ম্যাচ শেষে সুলশার বলেছেন, ‘আমি মনে করি সিটির বিপক্ষে আমার অধীনে এ পর্যন্ত সেরা পারফরমেন্স দেখিয়েছে ইউনাইটেড। ফল ভাল না হলেও পারফরমেন্সের দিক থেকে আমরাই সেরা ছিলাম। আমরা জানতাম কৌশলগতভাবে তাদের বিপক্ষে কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়তে হবে। কিন্তু রক্ষনভাগে আমরা দুর্দান্ত ছিলাম। যদিও আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি।’
এই ড্রয়ে এখনও ইউনাইটেড সিটির থেকে এক পয়েন্ট উপরে থেকে টেবিলের অষ্টম স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে পেপ গার্দিওলার দলের অবস্থান নবম। এই ম্যাচের মাধ্যমে টানা ষষ্ঠ ম্যাচে সিটিজেনরা কোন গোল হজম না করার রেকর্ড গড়েছে। গার্দিওলা বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে আমরা কোন গোল খাইনি। আজ জয়ের যথেষ্ঠ সুযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারা বেশ ভালভাবেই আমাদের প্রতিরোধ করেছে। আক্রমভাগে আমাদের আরো একটু বেশী সড়ব হওয়া উচিত ছিল।’
মার্কোস রাশফোর্ডকে ফাউলের অপরধে কাইল ওয়াকারের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের দুই মিনিটে পেনাল্টি উপহার পেয়েছিল ইউনাইটেড। কিন্তু রাশফোর্ডের অফসাইডের কারনে ভিএআর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয়।
এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে গুডিসন পার্কে ২২ মিনিটে প্রাপ্ত পেনাল্টি এভারটন ও চেলসির মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। মার্চের পর থেকে প্রথমবারের মত দুই হাজার সমর্থককে আতিথেয়তা দেবার ম্যাচটিতে কোন ভুল করেননি আইসল্যান্ডের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার গাইফিল সিগার্ডসন। স্পট কিক থেকে তিনি এভারটনের জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচ শেষে এভারটন বস কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন, ‘সমর্থকদের উপস্থিতি ম্যাচে দারুন প্রভাব ফেলেছে। যদিও তারা সংখ্যায় খুবই কম ছিল। তাদের সমর্থনটা সবসময়ই জরুরী। আজ এখানকার পরিবেশটা একেবারেই ভিন্ন ছিল।’
মৌসুমের দারুন এক শুরুর পর অক্টোবরের শুরুতে এভারটন টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছিল। কিন্তু গত সাতটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ী হয়ে আনচেলত্তির শিষ্যরা ষষ্ঠ স্থানে নেমে যায়। কালকের ম্যাচে জয়ী হয়ে তারা শীর্ষে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পারের থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে।
২২ মিনিটে ডোমিনিক কালভার্ট-লুইন চেলসি গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডির বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন। ঠান্ডা মাথায় স্পট কিক থেকে সিগার্ডসন এভারটনকে এগিয়ে দেন। বক্সের বাইরে থেকে রিস জেমস ও ম্যাসন মাউন্ট দুইবার পোস্টে বল লাগালে হতাশ হতে হয়েছে চেলসিকে। ইনজুরি আক্রান্ত হাকিম জিয়েচ ও ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের অনুপস্থিতে চেলসিকে কিছুটা হলেও চাপে থাকতে হয়েছে।
গত ১৮ ম্যাচে এনিয়ে প্রথম পরাজয়ের মুখ দেখলো ফ্রাংক ল্যাম্পার্ডের দল। ম্যাচ শেষে ল্যাম্পার্ড বলেছেন, ‘আমরা আজ প্রত্যাশানুযায়ী খেলতে পারিনি। সম্প্রতি আমাদের যা ফর্ম তার ধারেকাছেও আমরা আজ ছিলামনা। এটা আমাদের জন্য একটি বড় পরীক্ষা ছিল। কিন্তু আমরা সেই পরীক্ষায় পাস করতে পারিনি, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষা।’
সেন্ট জেমস পার্কে করোনাভাইরাসের কারনে গত সপ্তাহে এ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ম্যাচটি বাতিল হবার পর প্রথমবারের মত মাঠে নেমেছিল নিউক্যাসল। মাত্র ২০ সেকেন্ডে গোল করে প্রিমিয়ার লিগে এবারের মৌসুমে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়েছেন প্যারাগুয়ের মিডফিল্ডার মিগুয়েল আলমিরন। ৫০ মিনিটে ডারনেল ফারলংয়ের গোলে ওয়েস্ট ব্রুম সমতা ফেরালেও ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে ডুয়াইট গেইল স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত করেন। এই জয়ে নিউক্যাসল টেবিলের ১১তম স্থানে উঠে এসেছে।