দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ১৯ জন, সুস্থ ৩,৮৬৬

574

ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৬৬ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ১৮ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৯৮৬ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৬৬ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৬২০ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৪ হাজার ৪৮৬ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩১৮ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৩২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮৮৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২৩ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৬ হাজার ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৬১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৯ লাখ ৪৪ হাজার ২৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৩ লাখ ৫৪ হাজার ৪২২টি হয়েছে সরকারি এবং ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩০টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬৪৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৬০০ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৪৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৭৭ ও বেসরকারি ৬৩টিসহ ১৪০টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ৩২৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৬৫ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৪টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৮৬৪ দশমিক ৫৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৪৩২ দশমিক ৭৮ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪১ দশমিক ০২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৯ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৩৩৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৬৪৭ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৪২ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৯ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৬ জন; যা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৫৬ জন; যা ৫ দশমিক ১০ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৩৬ জন; যা ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৯৭ জন; যা ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৭৫৩ জন; যা ৫৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন এবং রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৭৯৫ জন; যা ৫৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩০১ জন; যা ১৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪১৭ জন; যা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫০৫ জন; যা ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩০ জন; যা ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৭৩ জন; যা ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩১৩ জন; যা ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫২ জন; যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৬০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৮১ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ১৭৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৮৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৩৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৫০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৪৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৬৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৩৮১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৪৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৭৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৬৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৩৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬০টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৪৫২টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯২৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৭ হাজার ৫২৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৭টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৫ জন এবং খালি আছে ২৩২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৮৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৬৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬১৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ৩ হাজার ৮৬৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ৩ হাজার ৭৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১৬ জন, রংপুর বিভাগে ৪৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৮৪৫ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭২ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯০ হাজার ৭০২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ৬৫৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৯৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ২৪০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৫৩৮ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮০ হাজার ৯২৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৬১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৭ হাজার ৪৩২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৩ লাখ ২২ হাজার ৬৩৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ১১৩টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৪৮১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৭৫৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭৯টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৯৩০ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ১২ হাজার ৭৬৩ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৮১৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৯২৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৮১ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৭ জন এবং ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৮৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।