বাসস ইউনিসেফ ফিচার-২ : পাটজাত পণ্য দিয়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডি করছেন মাশরেকা

172

বাসস ইউনিসেফ ফিচার-২
পাট-ব্র্যান্ডিং
পাটজাত পণ্য দিয়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডি করছেন মাশরেকা
ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : স্বপ্ন ছিল দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করার। মূল ইচ্ছে ছিল গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ে। আর তাই মাত্র এইচএসসি পাশ করেই পাড়ি জমান জার্মানিতে মাশরেকা বিনতে মোশারফ। উদ্দেশ্য ছিল গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবেন আর পাশাপাশি শিখবেন জার্মান ভাষা। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর দেখেন তার দেশ বাংলাদেশকে অনেকেই চিনেন না। অনেকভাবে বোঝানোর পরও অনেকেই মনে করতেন মাশরেকা ভারতীয়। বিষয়টি নিয়ে প্রথমে তার মন খারাপ হতো। পরে ভাবতে শুরু করল। কী করা যায়? এমন কিছু করতে হবে যাতে করে বাংলাদেশ বললেই যেন সবাই চিনতে পারে।
যেই ভাবা সেই কাজ শুরু। মাশরেকা দেশে ফিরে এসে শুরু করলেন বিশেষায়িত পাট পন্য তৈরীর কাজ। তার তৈরীকৃত পাটপন্য এখন রপ্তানী হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই এবং ভারতসহ বিভিন্ন দেশে তার তৈরীকৃত পন্যের রয়েছে ব্যপক চাহিদা। তিনি বিশ্বজুড়ে পাটপন্য সমাদৃত করতে কাজ করছেন। গত কয়েক বছর মাশরেকা বিনতে মোশাররফ বিশ্বজুড়ে পাটপণ্য সমাদৃত করতে কাজ করছেন। এখন অস্ট্রেলিয়া, জাপান, আমেরিকা, দুবাই ও ভরতে রপ্তানি করছেন পাটপণ্য। কয়েক বছর ধরে বাণিজ্য মেলায়ও হচ্ছে তার পণ্য প্রদর্শনী। স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশ থেকে করবেন পাটের ব্র্যান্ডিং।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে যান জার্মানি। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম বাংলাদেশকে তেমন কেউ চেনেন না। তাকে ভারতীয় বলেই মনে করেন। বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে তাকে। ঠিক করেন এমন কিছু করবেন; যার নাম শুনলেই বাংলাদেশকে চিনবে সবাই। তাই দেশে ফিরে পাটকে বিশেষায়িত করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে শুরু করি।
পাটের গবেষণাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে শুরু করেন মাশরেকা। ভাবতে থাকেন শুধু চট নয়; পাট দিয়ে হবে অনেক পণ্য। সেই ভাবনা থেকে প্রথমে পাটের পাঞ্জাবি তৈরি করেন। কিন্তু বুঝতে পারেন আমাদের দেশের আবহাওয়ায় পাটের পাঞ্জাবি উপযোগী নয়। পরে পাটের কুশন কাভার, ওয়াল ম্যাটসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করেন। এখন তার ১২০ রকমের পাটের কুশন কভার, ১০০ রকমের ওয়াল ম্যাটসহ অনেক ধরনের পণ্য রয়েছে।
মাশরেকা বলেন জার্মানিতে ভারতের কিছু নিম্নমানের পাটজাত পণ্য হলেও ভালো নকশার কারণে কদর রয়েছে। তিনি তাই নকশার পাশপাশি পণ্যের গুণগত মানের দিকেও নজর দেন। মাশরেকা আরও বলেন, মেইড ইন জার্মানি দেখলে আমাদের যেমন একটা নির্ভরতা আসে; পণ্যটি ভালো হবে। আমি ঠিক সেই জায়গা থেকে কাজ করতে চাই। আমি দেখেছি, ভালো পণ্য হলে তার কদর করে ক্রেতা। ক্রেতার গুরুত্ব ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন এক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে কিংবা ব্যাংকের কাছ থেকে লোন পেলে তার জন্য কাজটা আরো সহজ হতো। আর্থিক সহায়তা পেলে কেবলমাত্র পাটজাত দ্রব্য রপ্তানীর মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব।
বাসস ইউনিসেফ ফিচার/ফই/আহো/১১৩৫/স্বব