বাসস দেশ-৪৬ : খালেদা-তারেকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা

186

বাসস দেশ-৪৬
খালেদা-তারেক-মামলা
খালেদা-তারেকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্যে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হয়েছে।
এছাড়া এ মামলায় হেফাজত ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ইসলামী শাসনতন্ত্রের সৈয়দ ফয়জুল করিমকেও আসামি করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বাদি হয়ে এ মামলা করেন । আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা গ্রহণের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদেশ দেবেন বলে জানান।
মামলার বাদি এ বি সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অপরাধ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার জারির আবেদন করা হয়েছে ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেফাজত ইসলামের একটি আলোচনা সভায় হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের ভাস্কর্য থাকবে না এবং জাতির পিতার ভাস্কর্য করতে দেয়া হবে না। গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম হাটহাজারীতে হেফাজত ইসলামের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির জুনায়েদ আহমেদ বাবুনগরী বলেন, মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোন প্রকার ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না করলে আরও একটি শাপলা চত্বর ঘটাবেন বলে সরকারকে হুমকি দেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে ইসলামিক শাসনতেন্ত্রর একটি জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে ফয়জুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে যদি কোন ভাস্কর্য তৈরি করা হয় তাহলে সব ভাস্কর্য ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়া হবে। প্রয়োজনে আবারও শাপলা চত্বরে জমায়েত করা হবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সকাল ৬টার মধ্যে শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন। তোমরা সেভাবে কাজ চালিয়ে যাও। তারপর বাবুনগরীর হুকুমে হেফাজত ইসলামের জঙ্গিবাদিরা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর থেকেই এই উগ্রপন্থী স্বাধীনতাবিরোধীরা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এবং জাতির পিতা, দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে বিশ্বের কাছে দেশকে হেয়পতিপন্ন করছে।
একাত্তরের স্বাধীনতার যুদ্ধে পরাজিত গোষ্ঠী জামায়াত, আলবদর, রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭৫ এর বঙ্গবন্ধুর খুনি নেতৃত্বদানকারী মেজর জিয়াউর রহমান ও তার দল বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জামায়াত শিবিরসহ উগ্রপন্থী ইসলামিক দলগুলো স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার জন্য অপকর্ম, বিশৃঙ্খলতা ও স্বাধীনতার ইতিহাস ও জাতির পিতার স্মৃতি মুছে ফেলতে অপপ্রচার চালিয়ে দেশে জনগণের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। যা দেশের জনগণের ভিতরে একটি স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। এরপর থেকেই এই দেশে স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি দালালেরা একের পর এক কৌশলে দেশবিরোধী অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
২০০৪ সালে ২১ আগস্ট পাকিস্তানি দালালচক্র বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই জঙ্গিবাদিদের সঙ্গে ঐক্যজোট করে জাতির পিতার কণ্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য তার ছেলে তারেক রহমানকে দিয়ে গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে। আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান শেখ হাসিনা।
এছাডাও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০১৪ সালে জামায়াত শিবির ও বিএনপির গুন্ডাবাহিনি দিয়ে ভয়াবহ পেট্রলবোমা মেরে হাজার হাজার নিরীহ জনগণকে হত্যা করে। এমতাবস্থায় আবার এই স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানিদের দালালচক্র বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ইসলামিক জঙ্গিবাদি গোষ্ঠী জাতির পিতার ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কার্যকলাপ ও সংঘাত সৃষ্টি করছে।
জঙ্গিরা গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়াতে জাতির পিতার ভাস্কর্যের একটি হাত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের মধুর ভাস্কর্যের একটি কান ভেঙে দেয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশের জন্ম হয়েছে। জাতি পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ, সেই মহান নেতার হাত ভেঙে এই বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত ইসলাম, ইসলামিক শাসনতন্দ্রসহ এ সব ইসলামিক সংগঠনগুলো যারা এই দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করে পাকিস্তান বানানোর পরিকল্পনা করে এবং স্বাধীনতার স্থাপতি জাতির পিতার নাম এই দেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে চায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/২০২৩/কেকে