বাসস দেশ-১ : বিনামূল্যে নিজের তৈরী ৩ সহস্রাধিক মাস্ক বিলি করেছেন একজন দরিদ্র দর্জি আসলাম

174

বাসস দেশ-১
বিনামূল্যে-মাস্ক-বিতরণ
বিনামূল্যে নিজের তৈরী ৩ সহস্রাধিক মাস্ক বিলি করেছেন একজন দরিদ্র দর্জি আসলাম
নীলফামারী, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : মাস্কবিহীন কোনো লোক চোখে পড়লেই নিজের হাতে তৈরী কাপড়ের একটি মাস্ক পরিয়ে দেন এবং সচেতন হতে বলেন। করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিনামূল্যে তিন সহস্রাধিক মাস্ক বিতরণ করেছেন নুন আনতে পান্তা পুরানো লোকটা। তার নাম মো. আসলাম (৫৭)। পেশায় একজন দর্জি।
নীলফামারী জেলা শহরের প্রগতিপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে আসলাম। মড়াল সংঘ মোড়ে তার ‘আঁখি লেডিস টেইলার্স’ নামে একটি দোকান আছে। ওই দোকানের সামনের সড়কে মাস্কবিহীন লোক চোখে পড়লেই দ্রুত গিয়ে তার নিজ হাতের তৈরী মাস্ক পরিয়ে দেন তিনি। করোনা শুরু থেকে এভাবে বিনামূল্যে তিন সহস্রাধিক মাস্ক বিতরণ করেছেন তিনি।
আসলাম ১৪ বছর বয়স থেকে বাবার কাছে দর্জির কাজ শিখতে শুরু করেন। এখন দোকানটিতে তিনিসহ কাজ করছেন তার বড় ছেলে মনোয়ার হোসেন। আসলামের নিজের বাড়ি নেই, থাকেন শহরের প্রগতি পাড়ায় একটি ভাড়া বাসায়। দোকানের সামান্য আয়ে বাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দুই ছেলে এক মেয়েসহ পাঁচ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন অতি কষ্টে। সে আয়েরও ভাটা পড়েছে করোনার সংকটে। এরপরও মানুষের সেবার মানসিকতা দমেনি তার। সে মানসিকতা নিয়ে করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষায় নিজ হাতে তৈরী মাস্ক নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করছেন তিনি।
তিনি জানান, করোনার দূর্যোগ শুরু হলে মানুষ অনেকটাই নিরুপায় হয়ে পড়েন। দূর্যোগ মোকাবেলায় নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষকে সহযোগিতার ইচ্ছা জাগে তার। এরপর শুরু করেন কম দামে বিভিন্ন দোকান থেকে ঝুট কাপড় সংগ্রহ করা। কাজের ফাঁকে শুরু করেন নিজ হাতে মাস্ক তৈরী এবং বিতরণের কাজ।
আসলাম জানান, তিন স্তর বিশিষ্ট প্রতিটি মাস্ক তৈরীতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০ টাকা। এসব মাস্ক তিনি প্রতিদিন সামর্থ অনুযায়ী বিতরণ করে যাচ্ছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে।
তিনি বলেন, এক সময়ে ছাত্রলীগের আদর্শ ধারণ করে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম, যেতাম বিভিন্ন মিছিল মিটিং আর সমাবেশে। ওই সময়ে করেছিলাম মানব সেবার অনেক কাজ। সে মানসিকতা আজো বহন করেই চলেছি। আর তাই করোনার এ দূর্যোগে আমার সামর্থের মধ্যে সংক্রমণ রোধে দরিদ্র মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।’
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/০৯২৫/কেজিএ