বাসস দেশ-৫৯ : মার্কিন প্রতিষ্ঠান সিডিসি বাংলাদেশে করোনা টিকা গ্রহণকারীদের বাছাইয়ে সহায়তা দিতে আগ্রহী

185

বাসস দেশ-৫৯
করোনা-টিকা-বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রতিষ্ঠান সিডিসি বাংলাদেশে করোনা টিকা গ্রহণকারীদের বাছাইয়ে সহায়তা দিতে আগ্রহী
॥ তানজিম আনোয়ার ॥
ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : মার্কিন স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক ও গবেষণা ইনস্টিটিউট সিডিসি বলেছে, তারা সম্ভাব্য এন্টি-কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন গ্রহনকারীদের বাছাইয়ে অগ্রাধিকার নির্ধারণে বাংলাদেশকে তাদের দক্ষতা দিয়ে সহযোগিতা দিতে আগ্রহী। আগামী দিনগুলোতে এ বিষয়টি “বড় চ্যালেঞ্জ” হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকায় সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’র (সিডিসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা.মাইকেল ফ্রিডম্যান সম্প্রতি বাসস’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ফ্রিডম্যান বলেন, কোন ভ্যাকসিন তৈরী হওয়ার পরে প্রথম ছয় মাসের মধ্যে ১০ লাখের বেশী ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে।
তিনি বলেছেন, তাই, শিশুদের টিকাদান প্রক্রিয়ায় সাফল্য সত্ত্বেও বাংলাদেশে বয়স্কদের টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় কে প্রথম দফায় ভ্যাকসিন পাবেন তার অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা জরুরি।
“শিশুদের টিকাদান এবং বয়স্কদের টিকাদান কার্যক্রম এক নয়” এ কথা উল্লেখ করে ফ্রিডম্যান বলেন, বিপুল সংখ্যক বয়স্কদের টিকাদান অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রথম ভ্যাকসিন ডোজ পাওয়া উচিত এবং তাদের পরে “জরুরি সুরক্ষা কর্মী” ও প্রধান নীতি নির্ধারকরা। এখানে “আমাদের (সিডিসি) ভূমিকা হচ্ছে এই টিকাদান প্রক্রিয়ায় সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা দেয়া।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো যে সব দেশ কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন করেনা, এ সব দেশে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পেতে বিলম্ব হবে। বুস্টার ডোজ সহ গোটা বিশ্বের জন্য ১৫ শ’ কোটির বেশী কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন ডোজ প্রয়োজন হবে।
ফ্রিডম্যান বলেন, সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার জন্য ১৫ শ’ কোটির বেশী ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন। বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা ৭.৮ বিলিয়ন। বুস্টার ডোজসহ এদের প্রত্যেকের ২ ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন।
মার্কিন কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবিত ৩ টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনুমোদন পাওয়ার পরে প্রথম ছয় মাসে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বিশ্বের চাহিদার ১০ শতাংশেরও কম হতে পারে।
দ্রুত ভ্যাকসিন পেতে সকলকে “বাস্তববাদী” হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন পেতে বিশ্বের বেশীরভাগ জনসংখ্যাকে এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। এতে এক বছরেরও বেশী সময় লাগতে পারে।’
ফ্রিডম্যান বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মধ্যে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশ আরো সহযোগিতা লাভের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।
তিনি বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা ও মানের প্রশংসা করে বলেন, ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে কারিগরি চ্যালেঞ্জ আছে এবং এই সক্ষমতা অর্জন করা বেশ সময় সাপেক্ষ।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
মার্কিন বিশেষজ্ঞ আরো পরামর্শ দিয়েছেন, বাংলাদেশ তার সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য কোভিড ১৯ প্রতিরোধে রাশিয়া ও চীনের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলোর খোঁজ নিতে পারে।
এরআগে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, সরকার সবখানেই যোগাযোগ করেছে। যেখানেই কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে সেখান থেকেই সংগ্রহ করা হবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “যেখানেই ভ্যাকসিন পাবো আমাদের জনগণের জন্য তা সংগ্রহ করবো।”
বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা পরামর্শ দিয়ে বলেছে, কোন ভ্যাকসিন নিরাপদ,কার্যকর এবং ব্যবহার উপযোগী হিসাবে অনুমোদিত হলে বিশ্বের সব দেশ জনসংখ্যার অনুপাতে ডোজ পাবে, প্রাথমিকভাবে তা পরিমাণে কম হলেও।
ডব্লিউএইচও ভ্যাকসিন সুষ্ঠুভাবে বরাদ্দে “কোভ্যাক্স (বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন প্রকল্প) সুবিধার প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, প্রথম পর্যায়ে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ অগ্রাধিকার গ্রুপে ভ্যাকসিন সুবিধা পাবে।
দেশের সংক্রামক রোগ শনাক্ত করতে এবং অংশীদারদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহযোগিতা দিতে সিডিসি বাংলাদেশে ৫০ বছর ধরে কাজ করছে।
বাসস/টিএ/অনু -এমএবি/২১৩০/-শআ