পাইপ লাইনে নিরাপদ পানি সরবরাহে মডেল প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ

801

॥সৈয়দ এলতেফাত হোসাইন॥
ঢাকা, ৯ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য চারটি মডেল প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর)। কমিউনিটি-ভিত্তিক এই প্রকল্পে সৌরশক্তির দ্বারা নির্মিত প্লান্ট পানিকে আর্সেনিক ও আয়রন মুক্ত করে পাইপের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ করবে।
বিসিএসআইআর-এর সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. নজরুল ইসলাম ভূইয়া বাসস’কে বলেন, ‘পানিকে আর্সেনিক ও আয়রন মুক্ত করার লক্ষ্যে একটি মডেল উদ্যোগ হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে চারটি নির্বাচিত এলাকায় এই প্লান্ট স্থাপন করা হবে।’ এই উদ্যোগের সঙ্গে সমন্বয়কারী হিসেবে সম্পৃক্ত ভূইয়া বলেন, প্রকল্পটিতে কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দেবে জাপান ডেভেলপমেন্ট কনস্ট্রাকশন (জেডিসি) কর্পোরেশন এবং বাস্তবায়ন করবে বিসিএসআইআর। প্লান্টগুলো স্থাপনের জন্য বিসিএসআইআর বর্তমানে উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই প্রযুক্তিকে ‘জা পানি’ বলা হয়, যা বিষাক্ত আর্সেনিককে পানি থেকে পৃথক করে। পরে তা বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির জন্য সিরামিক শিল্প বা ইটের ভাটায় ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন, চারটি প্লান্টের মধ্যে একটি প্রদর্শনের জন্য ঢাকায় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিএসআইআর। পানিতে আর্সেনিক ও আয়রন বেশি পরিমাণে রয়েছে এমন এলাকা বিবেচনা করে বাকি তিনটি প্লান্ট স্থাপন করা হবে।
সরকারি সূত্রে বলা হয়, সারা দেশে পৌরসভা, কমিউনিটি বা বেসরকারিভাবে এ জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এমন আশায় বিসিএসআইআর এই স্কিম হাতে নিয়েছে।
ভূইয়া জানান, পাম্প স্থাপন ও এর কার্যক্রমের বিষয়ে দুই সপ্তাহ পূর্বে বিসিএসআইআর ও জেডিসি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। এতে একেকটি পাম্প থেমে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ১শ’ থেকে দেড়শ’ পরিবারের মধ্যে পানি সরবরাহ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এমওইউ অনুযায়ী মডেল প্লান্ট স্থাপনের জন্য আমরা এখন উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষ্যে পানির নমুনা সংগ্রহ করছি। প্লান্ট স্থাপনে জেডিসি কর্পোরেশন সব ব্যয় বহন করবে।’
ভূইয়া বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এই প্রযুক্তি সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতরকে (ডিপিএইচই) অবহিত করেছি এবং তাদেরকে তা আর্সেনিকপ্রবণ এলাকায় ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করেছি।’ ডিপিএইচ ইতোপূর্বে তাদের সমীক্ষায় দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬১টি জেলায় পানিতে আর্সেনিকের মারাত্মক উপস্থিতি পেয়েছে।