দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আরও ৩১ জনের মৃত্যু

568

ঢাকা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৪ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৮৩৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ২১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬৬৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২২২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ৫৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৮৮৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৮ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২২ লাখ ৯১ হাজার ৬১০টি হয়েছে সরকারি এবং ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৫৯টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৫২ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬০ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৯২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৩১৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৯৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১১৬টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১৩৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে (এন্টিজেনসহ) ১৩ হাজার ২১৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৫৪০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩২২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৮০৪ দশমিক ০৩ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৩২৪ দশমিক ৯৯ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪০ দশমিক ১৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩১ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২৩১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৬০৭ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩০ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৩ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৫০ জন; যা ৫ দশমিক ১২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮২০ জন; যা ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৬৭ জন; যা ২৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৬৬০ জন; যা ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, বরিশাল, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন করে এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬৫৯৫ জন; যা ৫৪ দশমিক ০৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৭৫ জন; যা ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪১৩ জন; যা ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫০২ জন; যা ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২২৬ জন; যা ৩ দশমিক ৩৩১ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৭০ জন; যা ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩১১ জন; যা ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪৬ জন; যা ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৫২ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ২৫২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৮৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮৩৪টি, ভর্তিকৃত রোগী ৩০৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৫২৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৩টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১১৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৮৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৩১টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩২টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৩৫৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৪১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৩১২টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৮ জন এবং খালি আছে ২৪০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৪ হাজার ৪২৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬২৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৮৪টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫৫২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৯৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬৫ জন, রংপুর বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ৩০ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন, সিলেট বিভাগে ৩৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজারে ৭৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৮০ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬৬৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭৬০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ৯০৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৫৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৬০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯২ হাজার ৪৫৪ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৪২৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৩ হাজার ২৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৯৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯৯ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ২৬৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৪ হাজার ৫৬৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৩১টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩১ লাখ ১৪ হাজার ৬৬৫টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৩৪৫ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৯৩৬ হাজার ৪০১ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১০ লাখ ২৩ হাজার ৪৫০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৮২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৫২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬৭ জন এবং ১৫ লাখ ১৩ হাজার ১৭৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।