আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস

405

মাগুরা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার মুক্ত হয় মাগুরা। পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তৎকালীন মাগুরা মহাকুমায় ব্যাপক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
মাগুরাকে শত্রু মুক্ত করতে শ্রীপুরের আকবর হোসেন মিয়ার নেতৃত্বাধীন শ্রীপুর বাহিনী, মহম্মদপুরের ইয়াকুব বাহিনী, মহম্মদপুর-ফরিদপুর অঞ্চলের মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কমল বাহিনী, মাগুরা শহরের খন্দকার মাজেদ বাহিনী এবং লিয়াকত হোসেনের নেতৃত্বে মুজিব বাহিনীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক সাহসী ভূমিকা নিয়ে পাক সেনা ও স্থানীয় রাজাকার আল বদর বাহিনীর সাথে প্রাণপণ যুদ্ধ করে। গেরিলা বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণের মুখে পাক বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনী নিজনান্দুয়ালী গ্রামসহ বিভিন্ন পাকিস্তানী ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। একই সাথে মিত্রবাহিনীর আগ্রাসনের ভয়ে পাকিস্তানী সেনারা রাতারাতি মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ৭ ডিসেম্বর মাগুরা শত্রুমুক্তির আনন্দে মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামে সারা শহরে। জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মাগুরা এলাকা। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যমত সংগঠক ভারতের রানাঘাট যুব ক্যাম্পের ইনচার্জ এমপি আছাদুজ্জামান মাগুরার মুক্তি বাহিনীকে দিক নির্দেশনা, যুদ্ধাস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করতেন। ৭ ডিসেম্বর বিকেলে সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক আছাদুজ্জামান মিত্রবাহিনীর দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাপতি মেজর চক্রবর্তীর সাথে সাজোয়া যানে মাগুরায় প্রবেশ করেন এবং সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সাবেক এমপি আছাদুজ্জামান মাগুরার সকল প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাগুরা নোমানী ময়দানে মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত কুজকাওয়াজে আছাদুজ্জামান অভিবাদন গ্রহণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মাগুরাকে পাকহানাদার মুক্ত বলে ঘোষণা করেন।
মাগুরামুক্ত দিবস উপলক্ষে মাগুরা জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৭ ডিসেম্বর জেলার সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১ টায় নোমানী মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পস্তবক অপর্ণ, বেলা সোয়া ১১টায় শহরের নোমানী ময়দানে মাগুরা মুক্ত দিবসের তাৎপর্য বিষয়ে আলোচনা, বিকেল ৩টায় নোমানী ময়দানে লাঠি খেলা, সাপ খেলা ও অষ্টক গান, সন্ধ্যা ৬ টায় ব্লাক আউট ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবস উদযাপিত হবে।