বাসস দেশ-২১ : লালমনিরহাট মুক্ত দিবস আগামিকাল

97

বাসস দেশ-২১
লালমনিরহাট- মুক্ত দিবস
লালমনিরহাট মুক্ত দিবস আগামিকাল
লালমনিরহাট, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস): লারমনিরহাট মুক্ত দিবস আগামিকাল ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ি যুদ্ধের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে এদিন দখলদার পাকিস্তানি সেনারা লালমনিরহাট ছেড়ে পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং রংপুরের বিরাট এলাকা।
ঔালমনিরহাটের সাবেক মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজবাউদ্দিন জানান, ১৯৭১ সালের ছয় ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট শহরকে ঘিরে চারিদিক দিয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।কয়েকটি স্থানে হানাদার পাকিস্তানি সেনাদেও সাথে তাদের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতা ও মরণপন লড়ায়েই কারণে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়।পাকিস্তানি সেনারা তাদের দোষর রাজাকারদের শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাহারায় রেখে একটি বিশেষ ট্রেনে অবাঙ্গালী বিহারিদের নিয়ে নিরাপদে রংপুরে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার পাকিস্তানি সেনাদের গতিবিধি বুঝতে পেরে তিস্তা রেলসেতুর মুখে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সন্ধ্যার একটু আগে তিস্তা রেলওয়ে সেতুর কাছে ট্রেনটি পৌঁছানো মাত্রই বীর মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে দ্রুত রংপুর অভিমুখে পালিয়ে যায়। এসময় পলায়নপর পাকিস্তানি সেনারা তিস্তা রেলসেতুর একটি গার্ডার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।
তিনি জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে পর্যুদস্থ হানাদার পাকিস্তানি সেনারা পালিয়ে যাওয়ায় ততক্ষনে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম এবং রংপুরের বিরাট এলাকা পাকিস্তানিদের দখলমুক্ত হয়ে যায়। লালমনিহাটে তিস্তা সেতুর যুদ্ধে জয়ের ঘটনা দ্রুত লোখমুখে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ আনন্দ মিছিল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। পাকিস্তানি বাহিনীর দোষর রাজাকাররা কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পেরে পালিয়ে যায়। এভাবেই সেদিন লারমনিরহাট শত্রুমুক্ত হয়ে যায়।
বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছালাম জানান, সেদিনের প্রতিরোধযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর এজাজসহ বেশ কয়েকজন সৈনিক নিহত হয়।আহত হয় শতাধিক পাকিস্তানি সৈনিক। সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুতে পলায়নপর পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বপূর্ণ জয়ের সূচনা করেন।
এদিকে, লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা তোরণসহ বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। দিনটিতে প্রশাসনের সকল ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতিমখানা, হাসপাতাল ও কারাগারে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে। মসজিদে মোনাজাত এবং মন্দিরসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।
বাসস/এনডি/সংবাদদাতা/১৭২০/-এমকে