বরিশালে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকদের চোখে-মুখে আনন্দের বন্যা

619

বরিশাল, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : জেলায় ফসলের মাঠজুড়ে কাঁচা-পাকা আমন ধানের মৌ-মৌ গন্ধ, বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই মাঠ ভরা আমন ধানের সমারোহ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর উফশী ও স্থানীয় সোনালী ফসলের বাম্পার ফলনে প্রান্তিক কৃষকদের চোখে মুখে আনন্দের বন্যা। ধান কাটার মৌসুম শুরু না হলেও কৃষকদের আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে আমন ধান কাটা নিয়ে। বাঙালী’র সেই চিরচেনা রুপ নŸান্ন উৎসব ও আমন ধানের পিঠায়। আর সেই আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষাণ- কৃষানীর মুখে হাসি। চলতি বছর জেলায় মোট ১ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখানে আবাদ হয়েছে সর্বমোট ১ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ ৮৫ হেক্টর। এরমধ্যে উফশী ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ হাজার ৫’শ ৫০ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ১’শ ৫০ হেক্টর ও স্থানীয় ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫ হাজার ১’শ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৭৪ হাজার ৫’শ ৩৫ হেক্টর জমিতে চাষা বাদ করা হয়েছে।
জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার প্রান্তিক কৃষক মো. রবিউল, মো. শামিম ও মানিক লাল জানান, চলতি বছর তাদের জমিতে আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। তবে ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে তারা চিন্তিত। নতুন ধান উঠলে, ধানের দাম না কমে যায় এমন শংঙ্কাও প্রকাশ করেন তারা। কৃষকারা বেশ সচেতন ও কৃষি বিভাগের পরামর্শের কারনে ধানে পোকার আক্রমণ ছিলো কম। বর্ষা মৌসুমে বেশী বৃষ্টির কারনে পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় চলতি মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাকেরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুছা ঈবনে সাইদ জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে কৃষকদের সচেতনতা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শগুলো কাজে লাগানো। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উফশী ও স্থানীয় ধানের ফলন হয়েছে বেশ। সব মিলিয়ে চলতি বছর আমনের মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে।
এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাহিমা হক জানান, চলতি আমন মৌসুমে এখানে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প ক’দিনের মধ্যে ধান কাটতে ব্যাস্ত হয়ে পড়বে স্থানীয় কৃষকরা।
এব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তাওফিকুল আলম জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকি ও কৃষকদের আগ্রহে চলতি আমনের মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ফলন বেশী হয়েছে। সে কারনে চাষীতে মুখে হাসির ঝিলিক। চলতি মৌসুমেও কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব উদ্দীন বাসস’কে বলেন, গত মৌসুমে কৃষকরা ন্যয্যমুল্য পাওয়ায়, চলতি মৌসুমে কৃষকরা আমন ধান চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আমাদের আশা এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হবে। এবারে আমন মৌসুমে ক্ষেতে তেমন কোন রোগ বালাইয়ের প্রভাব দেখছিনা। ধানের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, কৃষকরা এবার অত্যন্ত লাভবান হবে।