ঢাকা, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের ফিরতি লেগেও তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশালকে হারালো সাকিব-মাহমুদুল্লাহর জেমকন খুলনা। আজ টুর্নামেন্টের ১১তম ম্যাচে খুলনা ৪৮ রানে হারায় বরিশালকে। প্রথম পর্বে বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিলো খুলনা।
প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান করে সাকিব-মাহমুদুল্লাহর জেমকন খুলনা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন উইকেটরক্ষক জাকির হাসান। জবাবে ১২৫ রানে অলআউট হয় বরিশাল।
এই জয়ে ৫ ম্যাচে ৩টি জয় ও ২টি হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে উঠলো খুলনা। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১টি জয় ও ৪টি হারে ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে রয়েছে বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। ২ রান করে বরিশাল পেসার তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে বিদায় নেন ওপেনার জহিরুল ইসলাম।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে এরপর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার জাকির হাসান ও ইমরুল কায়েস। ১৪ ওভারে দলকে ১০৯ রানে পৌছে দেন তারা।
দ্বিতীয় উইকেটে ৬৮ বলে ৯০ রানের জুটি গড়েন উইকেটরক্ষক জাকির ও ইমরুল। ৩৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৭ রান করা ইমরুলকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি।
তবে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন এবারের আসরে প্রথমবারের মত খেলতে নামা জাকির। ইমরুলের পর জাকিরও থামেন। ৪২ বলে ১০টি চারে ৬৩ রান করে বরিশালের পেসার তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হন জাকির।
১৫ দশমিক ২ ওভারে দলীয় ১১৭ রানে ৩ উইকেট হারায় খুলনা। শেষ ২৮ বলে দ্রুত রান তোলার পরিকল্পনা ছিলো তাদের। কারন সাকিব-মাহমুদুল্লাহর দিকে চেয়েছিলো দল।
২টি চারে ইনিংস শুরু করলেও, এবারও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ সাকিব। ১০ বলে ১৪ রান করেন সাকিব।
সাকিব জ্বলে উঠতে না পারলেও শেষদিকে দ্রুত রান তুলেছেন মাহমুদুল্লাহ। ফলে ১৯ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৯ রানে পৌছায় খুলনা। তখন ১৩ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
শেষ ওভারে মাহমুদুুল্লাহর কাছ থেকে আরও কিছু রানের প্রত্যাশায় ছিলো খুলনা। কিন্তু ঐ ওভারের দ্বিতীয় বলে শামিম ও তৃতীয় বলে মাহমুদুল্লাহকে শিকার করে হ্যাট্টিকের সুযোগ তৈরি করেন রাব্বি।
কিন্তু রাব্বির আশা পূরণ হয়নি। চতুর্থ বলে শুভাগত হোম চার ও শেষ বলে আরিফুল হক ছক্কা মারেন। ফলে ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় খুলনা।
১৪ বলে ৪টি চারে ২৪ রান করেন মাহমুদুুল্লাহ। আরিফুল ১ বলে ৬ ও শুভাগত ২ বলে ৫ রান করেন। বরিশালের রাব্বি ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন। তাসকিন ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৭৪ রানের টার্গেটে শুরুটা ভালো ছিলো ফরচুন বরিশালের। দুই ওপেনার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমন। ৪৪ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা।
অষ্টম ওভারে বল হাতে নিয়েই ইমন-তামিমকে আউট করেন খুলনার অফ-স্পিনার শুভাগত। দ্বিতীয় বলে ইমনকে ও শেষ বলে তামিমকে শিকার করেন শুভাগত। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ বলে ৩২ রান করেন তামিম। ২৬ বলে ১৯ রান করেন ইমন।
নবম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৩ রান করা আফিফ হোসেন। ৬০ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর চাপে পড়ে বরিশাল। এ অবস্থায় দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর। তবে বড় জুটি গড়তে ব্যর্থ হন তারা। সাকিবের ঘুর্ণির সামনে আত্মসমর্পন করেন শুক্কুর। বোল্ড হবার আগে ১৬ রান করেন শুক্কুর।
এরপর এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন হৃদয়। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে তার আউটের পর শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলে হারের বরণ করে নেয় বরিশাল। ১৯ দশমিক ৫ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয় বরিশাল। খুলনার শুভাগত-শহিদুল-হাসান ২টি করে উইকেট নেন। সাকিব ৪ ওভারে ২২ রানে ১ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
জেমকন খুলনা : ১৭৩/৬, ২০ ওভার (জাকির ৬৩, ইমরুল ৩৭, রাব্বি ৩/৩৩)।
ফরচুন বরিশাল : ১২৫/১০, ১৯.৫ ওভার (হৃদয় ৩৩, তামিম ৩২, শহিদুল ২/১৭)।
ফল : জেমকন খুলনা ৪৮ রানে জয়ী।