দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

551

ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৭১তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা কমেছে, পাশাপাশি সুস্থতা বেড়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৩ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৭৪৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৮০৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৩১৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১১৮ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ৯৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ১৯৮ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০২ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৮ লাখ ২০ হাজার ৯৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৩৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৯৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৩৭৯ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮২ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৮৩৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৮৮৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৫৪টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ৮০৭ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৭২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৮৩৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৭৬৯ দশমিক ৯৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২২৮০ দশমিক ৪৭ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ৬২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৫ জনের মধ্যে পুরুষ ২৩ জন, আর নারী ১২ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ১৬৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৮৪ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৫ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৩ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৯ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৮২ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫১ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪৭ জন; যা ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮১২ জন; যা ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৫২ জন; যা ২৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৮ জন; যা ৫৩ দশমিক ৩২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে ৩ জন করে এবং রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬৪০ জন; যা ৫৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৬৯ জন; যা ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪০৯ জন; যা ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯৯ জন; যা ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২২০ জন; যা ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৬ জন; যা ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩০৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৯ জন; যা ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১২৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ২৭৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২২৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৯০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৫৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৫১২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৭০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৯৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯২ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৭টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৩৩৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৫৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৩৮৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৪ জন এবং খালি আছে ৩৪০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৬৮টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬১৩টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৪০৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫৯৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৯৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬৩ জন, রংপুর বিভাগে ৪৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৯ জন, বরিশাল বিভাগে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৯ জন, সিলেট বিভাগে ৩৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯৯৮ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮৫৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮২ হাজার ৭৮১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ১৮৩ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৩৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৭৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ৯২৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৯৬৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৯৫৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৯০৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৩৯৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৯২টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৮ হাজার ৮৮৬টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ২৬৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৬টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৮৬৪ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৫ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৮ লাখ ৭৮ হাজার ১১৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৭৭ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার ২৩৪ জন এবং ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।