বাসস ক্রীড়া-৪ : গিরুদের চার গোলে সেভিয়াকে বিধ্বস্ত করে শীর্ষে উঠে এলো চেলসি

92

বাসস ক্রীড়া-৪
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
গিরুদের চার গোলে সেভিয়াকে বিধ্বস্ত করে শীর্ষে উঠে এলো চেলসি
মাদ্রিদ, ৩ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : ফরাসি তারকা অলিভার গিরুদের চার গোলে কাল সেভিয়াকে ৪-০ ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ই-গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে উজ্জীবিত চেলসি।
৩৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হ্যাটট্রিক করার বিরল কৃতিত্ব অর্জণ করলেন। এর আগে এই রেকর্ডটি ধরে রেখেছিলেন হাঙ্গেরিয়ান সাবেক তারকা ফেরেং পুসকাস। ১৯৬৫ সালে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে ফেয়েনুর্ডের বিপক্ষে পুসকাস সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। এছাড়াও পাঁচ বছর আগে মালমোর বিপক্ষে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ম্যাচে চার গোল করার পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে গিরুদ এই কৃতিত্ব দেখালেন।
চেলসি ম্যানেজার ফ্রাংক ল্যাম্পার্ড বলেছেন, ‘এই মাঠে খেলা সব সময়ই কঠিন। অলিভারের অসাধারন একক দক্ষতায় আজ কঠিন কাজটিও সহজ হয়ে গেছে। আমরা সত্যিই তাকে নিয়ে দারুন আনন্দিত।’
ম্যাচ শুরুর আগে অবশ্য উভয় দলই শেষ ১৬ নিশ্চিত করে ফেলেছিল। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা ও গ্রপের শীর্ষ স্থান নিয়ে লড়াই। মূল একাদশে কাল বিস্ময়করভাবেই সুযোগ পেয়েছিলেন গিরুদ। বাম পা, ডান পা ও মাথার সাহায্যে গোল করে তিনি চেলসিকে শুধুমাত্র বড় জয়ই না, শীর্ষস্থানও উপহার দিয়েছেন। এছাড়া একটি গোল করেছেন পেনাল্টি থেকেও। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত গিরুদ বলেছেন, ‘আমি জানতাম না এই ধরনের হ্যাটট্রিকেও রেকর্ড করা যায়। দুই বছর আগে ডায়নামো কিয়েভের বিপক্ষে ইউরোপা লিগে হ্যাটট্রিক করেছিলাম। তবে এবারের হ্যাটট্রিকটা সত্যিই বিশেষ কিছু। সব সময় এভাবেই নিজেকে প্রমানের স্বপ্ন দেখি। দলের প্রয়োজনে দারুন এক পারফরমেন্স নিয়ে ম্যাচ শেষ করে বাড়ি ফেরা। ক্লাবের ইতিহাসের অংশ হতে পারাটা সবস ময়ই আনন্দের। চার গোল করতে পারার থেকেও দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পেরে আমি বেশী খুশী।’
ল্যাম্পার্ডের পছন্দের দুই স্ট্রাইকার টিমো ওয়ার্নার ও টামি আব্রাহামকে পিছনে ফেলে গিরুদ কখনই সামনে আসতে পারেননি। কিন্তু কালকের পারফরমেন্সের পর ল্যাম্পার্ডের প্রতি এটি গিরুদের একটি সর্তক বার্তাও বটে। মৌসুমে এনিয়ে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচে মূল একাদশে সুযোগ পেলেন গিরুদ। শনিবার প্রিমিয়ার লিগে লিডসের বিপক্ষে ম্যাচে তার মূল একাদশে খেলা প্রায় নিশ্চিতই বলা চলে। আগামী সপ্তাহে স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ক্রাসনোডারের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রাখার সুযোগ পাচ্ছেন ল্যাম্পার্ড। গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে পরাজিত হয়ে শেষ ১৬ থেকে বিদায় নেয়া চেলসি এবার নিজেদের বদলে এগিয়ে নিয়ে যাবার আভাষ ইতোমধ্যেই দিয়ে রেখেছে। এখন শুধু অপেক্ষা মাঠে তা প্রমানের।
কেই হাভাটর্জের পাস থেকে ৮ মিনিটে চেলসিকে এগিয়ে দেন গিরুদ। এরপর হ্যান্ডবলের কারনে সেভিয়ার আবেদন করা দুটি পেনাল্টি বাতিল হয়ে যায়। ২০ মিনিটে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের হ্যান্ডবল ধরতে পারেননি রেফারি আর্টার সোয়ারেস ডিয়াস। যদিও মাঠের বাইরে রাখা মনিটরে রিভিউ দেখেও তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। এরপর ইভান রাকিটিচের একটি ফ্রি-কিক চেলসির দেয়ালে আঘাত লাগার পর সেভিয়া হ্যান্ডবলের আবেদন করেছিল। দীর্ঘ সময় ভিএআর দেখেও তাতে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ঐ সমস্ত নার্ভাস মুহূর্ত ছাড়া ল্যাম্পার্ডের দল কোন ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েনি। এন্টোনিও রুডিগারের হেড লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করার পর পুলিসিচের লো ড্রাইভ রুখে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক আলফোনসো পাস্তোর।
র‌্যামন সানচেজ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকরা কিছুটা উজ্জীবিত হয়ে খেলা শুরু করে। নেমাঞ্জা গুডেজের পাস থেকে সার্বিয়ান তারকা জেসাস নাভাস সেভিয়াকে সমতায় ফেরাতে পারেনি। উল্টো ৫৪ মিনিটে মাতেও কোভাচিচের এসিস্টে জিরুদ ব্যবধান দ্বিগুন করেন। কিন্তু এখানেই থেমে যাননি এই ফরাসি তারকা। ৭৪ মিনিটে এন’গোলো কান্টের ক্রস থেকে ২০১৫ সালে আর্সেনালের হয়ে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক পূরণ করেন গিরুদ। ৮৩ মিনিটে স্পট কিক থেকে নিজের চতুর্থ গোলটি করলে বড় জয় নিশ্চিত হয় চেলসির।
বাসস/এএসজি/নীহা/১৬৩৯/স্বব