বাসস ক্রীড়া-১৪ : উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে রাজশাহীকে ১ রানে হারালো চট্টগ্রাম

304

বাসস ক্রীড়া-১৪
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে রাজশাহীকে ১ রানে হারালো চট্টগ্রাম
ঢাকা, ২ ডিসেম্বর ২০২০ (বাসস) : আরও একটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ উপভোগ করলো ক্রিকেট প্রেমীরা। বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের দশম ও আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ মিনিস্টার রাজশাহীকে মাত্র ১ রানে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।
ওপেনার লিটন দাসের হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেট ১৭৬ রান করে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। ৫৩ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন লিটন। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে রাজশাহী।
এই জয়ে চার ম্যাচের চারটিতে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে টেবিলের শীর্ষে চট্টগ্রাম। ৪ খেলায় ২টি করে জয়-হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে রাজশাহী।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে শান্ত-আশরাফুলের দল রাজশাহী। উদ্বোধনী জুটিতে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৬২ রানের জুটি গড়েন লিটন। এজন্য ৪৪ বল খেলেছেন দু’জনে। এরমধ্যে ২৫ বলে ৩৪ রান করেন লিটন। ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন সৌম্য।
সৌম্যর বিদায়ের পর চট্টগ্রামের দুই ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ১১ ও শামসুর রহমান ১ রান করে থামেন।
৯৬ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যান লিটন ও মোসাদ্দেক হোসেন। লিটন রানের চাকা সচল রাখলেও, মারমুখী মেজাজে ছিলেন মোসাদ্দেক। ২৮ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৪২ রান করেন মোসাদ্দেক। শিকার হন মুকিদুল ইসলাম অঙ্কনের।
পুরো ইনিংস ব্যাট করে আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করা লিটন ৯টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান। ইনিংসের শেষ বলেও উইকেট শিকার করে রাজশাহীর সেরা বোলার মুকিদুল। চট্টগ্রামের সৈকতসহ ৪ ওভারে ৩০ রানে ৪ ব্যাটসম্যান শিকার মুকিদুলের।
জয়ের জন্য ১৭৭ রানের জবাবটা দারুনই ছিলো রাজশাহীর। দুই ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৪ বলে ৫৬ রানের সূচনা এনে দেন। দ্রুত রান তুলতে থাকা শান্ত উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হওয়ার আগে ১৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ২৫ রান করেন শান্ত।
এরপর মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে টিকিয়ে রেখেছিলেন আনিসুল। আসরের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন আশরাফুল। তবে ১২ ওভারে দলের স্কোর ১০০তে পা দিতেই থামতে হয় অ্যাশকে। স্পিনার মোসাদ্দেকের শিকার হন আশরাফুল। ১৯ বলে ১টি চারে ২০ রান করেন আশরাফুল। এই জুটিতে ৪৪ রান আসে।
আশরাফুলের বিদায়ের পর আউট হন উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান আনিসুল। চট্টগ্রামের মিডিয়াম পেসার জিয়াউর রহমানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ রান করেন আনিসুল।
আনিসুল আউটের সময় জয়ের জন্য ৪০ বলে ৭২ রানের প্রয়োজন ছিলো রাজশাহীর। উইকেট ছিলো ৭টি। প্রয়োজনীয় রান রেট বেড়ে যাওয়ায় আক্রমনাত্মক খেরতে শুরু করেন হার্ড-হিটার মেহেদি হাসান। ১৫তম ওভারের প্রথম দু’বলে দু’টি চার ও ১টি ছক্কায় রানের গতি বাড়ান মেহেদি। তবে ১৭তম ওভারের শেষ বলে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে শরিফুলের বলে লেগ বিফোর হন মেহেদি। ১৭ বলে ২৫ রান করেন মেহেদি।
আর ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই বিদায় হয় ফজলে মাহমুদের। শরিফুলকে ছক্কা মারা ফজলে ৯ বলে ১১ রান করেন। তাকে শিকারের খাতায় তুলেন মুস্তাফিজ।
পরপর দু’বলে মেহেদি-ফজলের আউটে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় রাজশাহী। শেষ ২ ওভারে ২৭ রানের সমীকরন দাঁড়ায় তাদের। জিয়াউরের করা ১৯তম ওভারে ১টি করে চার-ছক্কা মারার পরই আউট হন ফরহাদ রেজা। তবে আশা-ভরসা ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। শেষ ওভারে ১৪ রানের প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্য পড়ে রাজশাহীর।
কিন্তু শেষ ওভারের প্রথম বলেই মুস্তাফিজের তৃতীয় শিকার হন সোহান। আর সেখান থেকেই জয় দেখতে শুরু করেছিলো চট্টগ্রাম। কারন শেষ ৩ বলে ১৪ রানই প্রয়োজন ছিলো রাজশাহীর।
চতুর্থ বলে চার ও পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জমিয়ে তুলেন রনি তালুকদার। তাতে শেষ বলে জয়ের জন্য চার রানের প্রয়োজন রাজশাহীর। কিন্তু ফিজের করা শেষ বল থেকে ২ রান নিতে পারেন রনি। তাতে ১ রানে ম্যাচ জিতে নেয় রাজশাহী। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৫ রান করে রাজশাহী।
শেষদিকে সোহান ৮, ফরহাদ-রনি ১২ রান করে করেন। চট্টগ্রামের মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ১৭৬/৫, ২০ ওভার (লিটন ৭৮*, মোসাদ্দেক ৪২, মুকিদুল ৩/৩০)।
মিনিস্টার রাজশাহী : ১৭৫/৭, ২০ ওভার (ইমন ৫৮, শান্ত ২৫, মুস্তাফিজ ৩/৩৭)।
ফল : গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১ রানে জয়ী।
বাসস/এএমটি/১০৩০/স্বব