দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় সংক্রমণ কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

390

ঢাকা, ২ ডিসেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৭০তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে সংক্রমণ কমেছে, পাশাপাশি সুস্থতার হার বেড়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৯৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১৯৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৯৫ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৫ হাজার ৫০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ২৯৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৮ লাখ ৪ হাজার ১৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৪২৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৬২ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৬ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮২ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৭১৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৮৮৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৯৬৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৮৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৭২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৫০১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪৭১টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৭৫৬ দশমিক ৭৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২২৬৫ দশমিক ২৫ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৯ দশমিক ৪২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৮ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, আর নারী ১৩ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ১৪১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৭২ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৭ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের বছরের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৫ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৯ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৪ জন; যা দশমিক ৮০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫০ জন; যা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪৭ জন; যা ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮০৭ জন; যা ১২ দশমিক ০২ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭৪৭ জন; যা ২৬ দশমিক ০২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৫৭৫ জন; যা ৫৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ৩০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রংপুরে ২ জন এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬১৮ জন; যা ৫৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৬৬ জন; যা ১৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪০৮ জন; যা ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯৯ জন; যা ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৯ জন; যা ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৬ জন; যা ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩০৩ জন; যা ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩৪ জন; যা ২ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪০৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ২১৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৪২ জন ও শয্যা খালি আছে ৫২৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৬০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৬০৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৩টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৩৩৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯৮৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৩৪৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২১ জন এবং খালি আছে ২৫৩টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৬৮টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬১৩টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৪০৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড়া পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৫৬২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৯১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২১ জন, রংপুর বিভাগে ৭৫ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৪ জন, সিলেট বিভাগে ৫১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯৯২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৩৬ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮১ হাজার ৭৮৩ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ৩৯ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৮৭ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ২১৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯১ হাজার ৬৯৩ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ৭৮ হাজার ৭৯২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৯০১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ২২৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৮৮ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২২৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৯ হাজার ১২০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৫৪১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ২১৩টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৫ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭২১ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার ৪৯৫ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন এবং ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ১৪৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।