বাসস দেশ-৩ : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত

149

বাসস দেশ-৩
চট্রগ্রাম-করোনা-বাড়ছে
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত
চট্টগ্রাম, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : চট্টগ্রামে সাড়ে চার মাসে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংখ্যা ও হার দু’ক্ষেত্রেই এ সময়ের মধ্যে একদিনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। মৃত্যুও হয়েছে একজনের। একই দিনে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার অতিক্রম করে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ১ হাজার ৪০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯১ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এর আগে ২৩ নভেম্বর একদিনে সর্বোচ্চ ২৪২ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ছিল ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এ সময়ে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।
রিপোর্টে জানা যায়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২৯১ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৫৫ জন এবং বারো উপজেলার ৩৬ জন। ফলে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ২৫ হাজার ১৩৫ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে ১৮ হাজার ৮৭৫ জন শহরের ও ৬ হাজার ২১৩ জন গ্রামের। উপজেলায় আক্রান্তদের মাঝে হাটহাজারীতে ১০ জন, পটিয়ায় ৭ জন, রাউজানে ৬ জন, সীতাকু-ে ৩ জন, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১৯ জনে। এর মধ্যে ২২৪ জন শহরের ও ৯৫ জন গ্রামের। সুস্থতার ছাড়পত্র দেয়া হয় ৪৬৫ জনকে। মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ২২ হাজার ২৯৪ জনে উন্নীত হলো। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৩৫১১ জন ও বাসায় চিকিৎসায় সুস্থ হন ১৮ হাজার ৭৮৩ জন। হোম আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হন ৩৮ জন ও ছাড়পত্র নেন ৪৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২২৭ জন।
উল্লেখ্য, রোববার শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা ও হার সাড়ে চার মাসে একদিনের সর্বোচ্চ। চলতি মাসে চারদিন সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা দুইশ’ ছাড়িয়ে গেলো। এর আগে ২৩ নভেম্বর ২৪২ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। তবে সেদিন কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। এছাড়া এ মাসের আরো দু’দিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশ’ পার হয়। ২৬ নভেম্বর ২২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ১৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। ২৭ নভেম্বর ২০৬ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এদিন করোনাক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এর আগে সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি সংক্রমিত শনাক্ত হয় ১৬ জুলাই।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি আজ সকালে বাসস’কে জানান, ‘১৬ জুলাইয়ের পর রোববারের শনাক্ত সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ওইদিন ৩৯৯ জন জীবাণুবাহক শনাক্ত হন। প্রথম প্রকোপের সময় ৩০ জুন ছিল সে সময়ের সর্বোচ্চ ৪৪৫ জন আক্রান্ত। এছাড়া, ২৯ জুন ৩৪৬ জন, ১ জুলাই ৩৭২ জন, ৭ জুলাই ২৯৭ জন, ৮ জুলাই ২৯৫ জন এবং ৬ জুলাই ২৯২ জন ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়।’
এদিকে, ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৫৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে ২৪ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৩৪৩ জনের নমুনায় ১০৪ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৩৪ টি নমুনার ৪৪ টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে (সিভাসু) ৩৫ জনের নমুনায় ১৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ২১ টি নমুনা পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়। এখানে ৯ টিতে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়।
নগরীর বেসরকারি তিন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৬৬ নমুনায় ৫৪ জন, শেভরনে ৪৩ নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জন এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৫২ নমুনায় ২১ জন করোনাক্রান্ত পাওয়া যায়।
এদিন চট্টগ্রামের ৫৪ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৪ দশমিক ৩২, চমেকে ৩০ দশমিক ৩২, চবি’তে ৩২ দশমিক ৮৩, সিভাসু’তে ৪০, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩২ দশমিক ৫৩, শেভরনে ৪৮ দশমিক ৮৪ এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
বাসস/জিই/কেএস/কেসি/১৩৩০/-আসাচৌ