বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : সরকার দেশব্যাপী রেল যোগাযোগ আরো সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

157

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-রেলসেতু-ভাষণ
সরকার দেশব্যাপী রেল যোগাযোগ আরো সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস যাতে আমাদের দেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য যা যা করা দরকার আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, আমি আবারো দেশবাসীকে আহবান জানাব, সকলেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মগুলো মেনে চলবেন। শেখ হাসিনা মাস্ক ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘নিজেকেও সুরক্ষিত করেন এবং অপরকেও সুরক্ষিত রাখেন। যাতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ করতে না পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমি খুবই আনন্দিত, কেননা রেল সেতু করার ব্যাপার নিয়ে আমাকে অনেক তর্ক করতে হয়েছে,অনেক দেন দরবার করতে হয়েছে। আজকে একটা আলাদা সেতু হয়ে যাচ্ছে যারফলে আমি মনেকরি দেশের অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নতো হবেই তেমনি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা আরো সমৃদ্ধ হব, যা আমাদের দেশকে ভবিষ্যতে আরো উন্নত করবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছেন। তাঁর কাক্সিক্ষত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশনে বিএনপি’র রেলবন্ধ করে দেওয়ার প্রচেষ্টার উল্লেখ করে বলেন, অথচ তিনি নিজের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু সেতুর সঙ্গে রেল সংযোগ প্রদান করেন। আর এখন দাতাগোষ্ঠীরাই সেখানে পৃথক একটি রেলসেতু করারও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন।
একের পর এক রেলষ্টেশন বন্ধ করে দিয়ে রেলকর্মচারিদের কর্মচ্যুতি ঘটানোর প্রসংগ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেলকে প্রায় গলাটিপে হত্যা করতে গিয়েছিল বিএনপি সরকার। আমরা ক্ষমতায় এসে তাকে জীবিত করেছি। এখন রেলই মানুষের সবথেকে বড় ভরসা। আমরা দেখতে পাচ্ছি সে রেল সবকিছুতেই মানুষকে সুযোগটা করে দিচ্ছে, যা অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে বলে আমি মনেকরি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা দেশ ও দেশের মানুষের কথা কখনও চিন্তা করেনি। তাদের কোনো দায়বদ্ধতা ছিল না। তারা নিজেদের সম্পদ গড়ার কাজে ব্যস্ত ছিল। তারা রেলকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, আওয়ামী রীগ সরকার ২০০৮ সালে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে সারাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে নতুন রেল,বগি, ক্যারেজ, ইঞ্জিন আমদানীর পাশাপাশি নতুন রেলপথে সৃষ্টি করলেও ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের নামে বিএনপি-জামায়াত সবচেয়ে বড় আঘাতটা হানে এই রেলের উপরেই।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, ‘জাপান আমাদের সত্যিকার পরীক্ষিত বন্ধু এবং জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে জাপান সফরের সময়ই যমুনা নদীর ওপর সেতুর জন্য জাপানকে অনুরোধ করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে জাপান যাওয়ার পর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর জানতে চাওয়ার প্রেক্ষিতে খুলনা ও বাগেরহাটের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারি রুপসা সেতু এবং পদ্মা সেতু নির্মানে জাপানের সহযোগিতা চান তিনি। তিনি বলেন, এ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী রাজী হয়ে জানতে চান প্রথম কোনটা করা হবে।
যেহেতু রুপসাটা তাড়াতাড়ি হবে, আর পদ্মা খর¯্রােতা নদী,এটার সমীক্ষায় সময় লাগবে, ব্রীজ বানাতেও সময় লাগবে, তাই রুপসা সেতুর কথাই আগে বলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান সরকার পদ্মা সেতুর বর্তমান স্থলে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করার পর তাঁর সরকার ২০০১ সালে সেখানে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেও পরবর্তী খালেদা জিয়া সরকার সে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য যে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটা বন্ধ কওে দেয়। খালেদা জিয়া বলল এখানে সেতু করা যাবে না।’
২০০৮ সালে আওয়ায়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ আল্লাহর রহমতে প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথনই জাপান গিয়েছি তখন সবসময়ই জাপান সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এজন্য বিশেষভাবে আমি জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
সর্বশেষ তিনি যখন জাপান সফর করেন তখন শিনজো আবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যিনি দুহাত খুলেই বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছেন, উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘তাঁকে এবং জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকেও আমি ধন্যবাদ জানাই তাঁরা সবই বাংলাাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭২৫/-কেএমকে