বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : মেধা, জ্ঞান, বুদ্ধি ও মননকে দেশের কাজে লাগাতে সরকারি কর্মচারিদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

141

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-বিসিএস একাডেমি-ভাষণ
মেধা, জ্ঞান, বুদ্ধি ও মননকে দেশের কাজে লাগাতে সরকারি কর্মচারিদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

তাঁর সরকার যে দেশের উন্নয়ন করতে পারে সেটা প্রমাণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে সরকারে থাকায় আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের ওপরে অর্জনের যে লক্ষ্য নিয়েছিলাম, তা পূরণ করতে সক্ষম হলেও করোনার কারণে আমরা পিছিয়ে গিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘বিশে^র অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি যেখানে ঋণাত্মক ধারায় চলে গিয়েছে সেখানে আমরা ৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি।’
তিনি করোনা মোকাবেলায় তাঁর সরকারের দেয়া প্রণোদনা, নগদ অর্থ সাহায্য এবং মানুষের দ্বারে খাবার পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টার উল্লেখ করে বলেন, ‘মানুষের জীবনযাত্রা যাতে সচল থাকে এজন্য করোনার মধ্যেও আমরা যথাযথ প্রচেষ্টা চালিয়েছি।’
দেশকে জানতে হলে, দেশের উন্নতি করতে হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা-ভাবনা সকলকে জানার প্রচেষ্টা গ্রহণে তিনি প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের জাতির পিতার রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের জাতির পিতাকে নিয়ে করা প্রতিবেদন থেকে প্রকাশিত বইগুলো এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রসিডিংস নিয়ে প্রকাশিত বইটি পড়ে দেখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে আমার মনে হয়, আপনারা জাতির পিতার চিন্তা-চেতনা, দর্শন এবং তখকার বিশ^ পরিস্থিতি এবং নিজের দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। আমি মনে করি, এটা আপনাদের চলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপযোগী হবে।’
সরকারের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি দেশকে উন্নয়নশীল করে গড়ে তুলতে যা যা করণীয় তার সবই আমরা করতে পেরেছি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
‘লক্ষ্য স্থির না থাকলে কখনও কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোন জাতির উন্নয়নের জন্য একটা দিক নির্দেশনার দরকার হয়, একটা দর্শন, একটা লক্ষ্য থাকতে হয়। সেজন্য তাঁর সরকার পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সরকারে আসার পর আশু করণীয় ঠিক করে তাৎক্ষণিকভাবে যেমন মানুষের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি, মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি এবং সুদূর প্রসারী পরিকল্পনাটাও করে দিয়ে গেলাম। যারা পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসবেন তাঁরা যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।’
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে এবং আজকে আপনারা যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছেন আপনারাই কিন্তু তখন একটা উচ্চ পর্যায়ে যাবেন। ’৪১ এর কর্ণধার আপনারাই হবেন, বাস্তবায়ন আপনারাই করবেন। কাজেই সেইভাবেই নিজেদেরকে গড়ে তুলবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেভাবেই নিজেদেরকে প্রস্তুত করবেন-এই দেশের ভাগ্যহত গরিব, দুঃখী মানুষ, যাঁদের জন্য জাতির পিতা সারাজীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁদের কথা আপনাদের চিন্তা করতে হবে। দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেই আপনাদের কাজ করতে হবে।’
তাঁর সরকার দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন প্রযুক্তি নির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই যাতে সারাবিশে^ সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। মানুষ যেন নিরাপদে থাকতে পারে এবং উন্নত জীবন পেতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য সারাদেশে সরকার তথ্যপ্রযুক্তির নেটওয়ার্ক যেমন গড়ে তুলেছে তেমনি রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রীজ নির্মাণ করে সড়ক পথ সহ জলপথ, রেলপথ এবং আকাশ পথের উন্নতি সাধন করে সমগ্র দেশব্যাপী যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও গড়ে তুলেছে।
জাতির পিতার বক্তব্য ‘ভিক্ষুক জাতির কোন ইজ্জত থাকে না,’ উদ্ধৃত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি কারো কাছে হাত পেতে নয়, নিজেরা যেন চলতে পারি। এমনকি এই করোনার মধ্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনগণের খাদ্য পুষ্টির চাহিদা পূরণেও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জমি সীমিত হলেও গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে আজকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। যেটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৬৪৫/আরজি