বাসস ক্রীড়-৩ : ঘরের মাঠে আটালান্টর কাছে পরাজিত লিভারপুল

110

বাসস ক্রীড়-৩
ফুটবল-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
ঘরের মাঠে আটালান্টর কাছে পরাজিত লিভারপুল
লন্ডন, ২৬ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : এ্যানফিল্ডে বুধবার আটালান্টার কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ১৬’তে যাবার সুযোগ আপাতত হাতছাড়া করেছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। আর এই হতাশাজনক পরাজয়ে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ স্বীকার করেছেন এই ধরনের হারের পিছনে কোন কারন দেখানো যায়না।
এই ম্যাচে জয়ী হতে পারলেই ক্লপ বাহিনী ডি-গ্রুপ থেকে শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ১৬’র টিকিট নিশ্চিত করতে পারতো। কিন্তু পুরো ম্যাচেই বাজে পারফরমেন্সের খেসারতে ইতালিয়ান দলটির এই জয়টা প্রাপ্য ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে জোসিপ ইলিসিচ ও রবিন গোসেনসের চার মিনিটের দুই গোলে আটালান্টার জয় নিশ্চিত হয়। এর মাধ্যমে এবারের মৌসুমে প্রথম হারের স্বাদ পেল অল রেডসরা।
নভেম্বরের শুরুতে ইতালিতে প্রথম লেগের ম্যাটে স্বাগতিক আটালন্টাকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল লিভারপুল। কিন্তু গত অক্টোবরে এভাটরনের বিপক্ষে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে ভার্জিল ফন ডাইক মাঠের বাইরে চলে যাবার পর এই প্রথমবারের মত লিভারপুলের রক্ষনভাগকে এতটা ছন্নছাড়া দেখা গেছে। যে কারনে এ্যানফিল্ডে সচরাচর পরাজয়ের স্বাদ না পাওয়া স্বাগতিকরা কাল দীর্ঘদিন পর সেই অভিজ্ঞতাও অর্জন করলো। ডাচ তারকা ডিফেন্ডার ফন ডাইক সাইডলাইনে যাবার পর সব ধরনের প্রতিযোগিতায় নয় ম্যাচ পরে হারের তিক্ত স্বাদ পেল রেডরা। যদিও চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে এখনো গ্রুপের শীর্ষেই রয়েছে ক্লপ বাহিনী।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘কঠিন একটি ম্যাচে পরাজয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। রেফারি আজ খুব একটা বাঁশি বাজায়নি, যে কারনে ম্যাচটি উভয় দলের জন্য আরো কঠিন হয়ে ওঠে। ম্যাচের গতি দুর্দান্ত ছিল, যে কারনে শেষের দিকে খেলোয়াড়দের বেশ পরিশ্রান্ত দেখা গেছে। প্রথমার্ধ শেষ হবার পর সাধারনত দলগুলো নিজেদের গুছিয়ে নেবার সুযোগ পায়। কিন্তু যে খেলোয়াররা বেশ কিছুদিন যাবত মূল একাদশে খেলার সুযোগ পায়নি তাদের জন্য বিষয়টা কঠিন। পুরো ম্যাচে আমরা ফিরে আসার কোন পথ খুঁজে পাইনি।’
আগেভাগেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত হলে ক্লপের হাতে সুযোগ থাকতো ব্যস্ত সূচীতে গ্রুপের শেষ দুটি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রাখার। তার পরিবর্তে আগামী সপ্তাহে আয়াক্সকে আতিথেয়তা দেবার ম্যাচে অনেকটাই নার্ভাস থাকতে হবে রেডসদের। শেষ ম্যাচে তারা মুখোমুখি হবে মিডজিল্যান্ডের।
ক্লপ বলেন, ‘এটা মোটেই ভাল ম্যাচ ছিলনা। আমরা কিছু কিছু সুযোগ তৈরী করলেও সেগুলো সত্যিকারের কোন আক্রমন ছিলনা। শনিবার দুপুর ১২.৩০ মিনিটে আমাদের ব্রাইটনের সাথে লিগ ম্যাচ খেলতে মাঠে নামতে হবে যা সত্যিকার অর্থেই একটি অপরাধ। এই ম্যাচে ফল খারাপ হলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না। আশার কথা হচ্ছে দলে এই মুহূর্তে নতুন কোন ইনজুরি নেই।’
এই জয়ে আয়াক্সের সাথে সমান ৭ পয়েন্ট অর্জন করেছে আটালান্টা। লিভারপুলের ইনজুরির তালিকায় এখনো আছেন ফন ডাইক, জো গোমেজ, জর্ডান হেন্ডারসন, থিয়াগো আলচানতারা, নেবি কেইটা ও ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড। যে কারনে ক্লপকে বাধ্য হয়ে রক্ষনভাগ ঢেলে সাজাতে হয়েছে। জো মাটিপের সাথে নিকো উইলিয়ামস, রায়াস উইলিয়ামস ও কোস্টাস টিসিমিকাস ছিলেন রক্ষনভাগ ও ডিফেন্সিফ মিডফিল্ডের দায়িত্বে। তারপরেও প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন্স দলটি শেষ পর্যন্ত নিজেদের প্রতিরোধ করতে পারেনি। রক্ষনভাগে লিভারপুলের দক্ষতার সুযোগে আটালান্টা এগিয়ে যায়। মাটিপকে কাটিয়ে গোসেন্স শক্তিশালী স্ট্রাইকে লিভারপুল গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করতে পারেননি। পাপু গোমেজ এরপর গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকার পর কাল লিভারপুলে ফিরেছিলেন মিশরীয় স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহ। ৬০ মিনিটে অবশ্য আর শেষ রক্ষা হয়নি। গোমেজের ক্রসে খুব কাছে থেকে ফাঁকায় থাকা ইলিসিচের শট আটকাতে পারেননি এ্যালিসন। এরপরপরই ক্লপ চারটি পরিবর্তন করে দিয়োগো জোতা, রবার্তো ফিরমিনো, ফ্যাবিনহো ও এ্যান্ড্রু রবার্টসনকে মাঠে নামান। কিন্তু তারপরেও লিভারপুলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়য়নি। উল্টো ৬৪ মিনিটে গোনেন্স ব্যবধান দ্বিগুন করলে বর্তমান প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের সব আশা শেষ হয়ে যায়।
এই গ্রুপে দিনের আরেক ম্যাচে আয়াক্স এ্যামাস্টারডামে ঘরের মাঠে মিডজিল্যান্ডকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে জয়ের ধারা ধরে রেখেছে।
বাসস/নীহা/১৫০৫/-স্বব