দেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩৯ জন, সুস্থ ২,৩০২

340

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৬৩তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩০২ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৪৮৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ১৪ নভেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩০২ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৩৬ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ২৬৬ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৭৯ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ২৯ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১২ শতাংশ বেশি ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১৫৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৪ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ২৩০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৫৪ হাজার ১৪৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৭৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ২৬৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৫১২টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ১৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৯৮৩টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৬৬৬ দশমিক ৬৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২১৬৭ দশমিক ৭৩ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৮ দশমিক ০৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন, আর নারী ১২ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৯৮২ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫০৫ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৯ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১২ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২২ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১ জন; যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫১ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৫ জন; যা ২ দশমিক ২৪ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪০ জন; যা ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৯১ জন; যা ১২ দশমিক ১৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬৯৫ জন; যা ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৪৩৪ জন; যা ৫২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে এবং সিলেট বিভাগে ১ মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৪৮ জন; যা ৫৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৪৭ জন; যা ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৯৭ জন; যা ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯০ জন; যা ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৫ জন; যা ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৪ জন; যা ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৯৪ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩২ জন; যা ২ দশমিক ০৩ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৩৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৩৫৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৯১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ২০৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৬৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৭৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৮৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৩টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪২৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯২১ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৫০৭টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ২৯৯ জন এবং খালি আছে ২৫৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬২৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৩০২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৭০৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮৯ জন, রংপুর বিভাগে ২৭ জন, খুলনা বিভাগে ৬২ জন, বরিশাল বিভাগে ৩৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৯ জন, সিলেট বিভাগে ৩৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯৪৩ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭১৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩৫ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ২৩৮ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২০২ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১৬২ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২২৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৬৪৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৫৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ৯৪৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৫১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৭ হাজার ৪৯২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২১৯টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ১১০টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৪টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪৭৫ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৬২ হাজার ১১৬ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৪ লাখ ৭০ হাজার ১০৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৫৪৭ জন এবং ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।